জনগণ আরটিআই আইনের সুবিধা পেতে শুরু করেছে: তথ্য কমিশনার

আপডেট: April 13, 2022 |

মানুষ এখন তথ্য অধিকার (আরটিআই) আইনের সুবিধা পেতে শুরু করেছে, কারণ, ক্রমান্বয়ে অধিকসংখ্যক মানুষ এখন, বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য আরো সহজে এবং দ্রুত পাচ্ছে জানিয়েছেন তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক।

২০২০ সালে মোট ৯ হাজার ৭৯৭জন আবেদনকারী আরটিআই আইনের অধীনে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চান এবং তাদের মধ্যে প্রায় ৯ হাজার ৩৮৭জন আবেদনকারী তাদের প্রয়োজনীয় ৯৫.৮২ শতাংশ তথ্য পেয়েছেন। মানুষ যাতে হয়রানি মুক্ত ভাবে তথ্য পেতে পারে, সেই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে তথ্য কমিশন।

বুধবার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য জানান।

ড. মালেক বলেন, ‘আরটিআই আইনটিকে সমস্ত সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বিধিবদ্ধ সংস্থাগুলোতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সরকার ও জনগণকে সহায়তার লক্ষ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ আইনটি বাস্তবায়নের জন্য তথ্য কমিশনকে বিভিন্নভাবে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।’

তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের তথ্যের অধিকার পাওয়া, রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই আরটিআই আইন প্রণয়ন করা হয় উল্লেখ করে এই তথ্য কমিশনার বলেন, ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই কার্যকর ও জনবান্ধব আইনটি প্রণয়ন করে, যা জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ৫ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে পাস হয়।

তথ্য কমিশনার আবদুল মালেক জানান, ‘মানুষ ধীরে ধীরে তাদের তথ্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে এবং তারা এখন এই আইনের অধীনে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য চাইছে।’

কমিশনের বার্ষিক রিপোর্ট ২০২০-এর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আইসি-এর কাছে মোট ৩ হাজার ৮৬৪টি অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার ২১৮ অভিযোগ কমিশন নিষ্পত্তি করেছে। তথ্য প্রদানের জন্য সর্বাধিক সংখ্যক আবেদন গ্রহণকারী ১০টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার মধ্যে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ই ৮৩৩টি আবেদনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৩২ জন আবেদনকারীকে তথ্য সরবরাহ করেছে।

যে ১০টি জেলায় সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে, সেগুলো হলো-নীলফামারী, নওগাঁ, যশোর, বরিশাল, সিলেট, খুলনা, বগুড়া, নাটোর, লালমনিরহাট ও সুনামগঞ্জ। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং তাদের অধীনস্থ সংস্থাগুলি আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে, ২০২০ সালে রাজস্ব হিসাবে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭২১ টাকা আয় করেছে।

উল্লেখ্য, আরটিআই আইনের ১১ ধারা অনুযায়ী, সরকার ১ জুলাই, ২০০৯ তারিখে তথ্য কমিশন গঠন করে। কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ প্রধান তথ্য কমিশনার (সিআইসি)। অপর দুই কমিশনার হলেন-সাবেক সিনিয়র সচিব ড. আবদুল মালেক ও সুরাইয়া বেগম।

তথ্য কমিশনে ২০২০ সালে মোট ২৯০ টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে, ১৫৯ টি অভিযোগের শুনানি হয় এবং ৬২টির মতো অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়। নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, কমিশন তাদের তথ্যের অধিকার সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, জনসচেতনতামূলক সভা এবং কর্মশালার আয়োজন করে। এছাড়া, আইসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর