হাই কোর্টে জামিন চেয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বরগুনার মিন্নি

আপডেট: May 30, 2022 |

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন দায়ের করেছেন। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হবে।

সোমবার (৩০ মে) অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি খালাস চেয়ে আপিল করেন।

২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালত। রায়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জন অভিযুক্তকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। এছাড়া মামলার অন্য চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। বর্তমানে মিন্নিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। খালাস পেয়েছেন মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স অ্যাকাডেমির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড, মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী এবং তাদের সহযোগীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রিফাতের স্ত্রী মিন্নিও। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।

এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা। পরে ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫) নিহত হন।

হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওইদিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন।

১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক, দুভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এরমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন রয়েছেন। গত ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।

বিচার শেষে গত বছরের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। বাকি তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর