বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি জামালপুরে

আপডেট: June 26, 2022 |

জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিত উন্নতি হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলার নিন্মাঞ্চলের যেসব এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছিল যেসব এলাকার তলিয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট বাড়িঘর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি ৩৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদনদীর পানিও কমতে শুরু করেছে বলে জানান জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ ।

পানি কমার সাথে সাথে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে মানুষজন বাড়ি ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ। বন্যায় বিধস্ত বাড়িঘর সংস্কারে ব্যস্ত সময় কাটছে সাধারণ মানুষের।

বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ত্রাণ বিতরণের খবর পেলেই ছুটে আসছেন বানভাসি মানুষেরা। তবে সরকারী বরাদ্ধ চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফলে ত্রাণ না পেয়ে অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় খাদ্য সংকট এখনো কাটেনি। কর্মহীন মানুষজন না খেয়েও দিন পার করছে।

ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শি ইউনিয়নের মোসলেমাবাদ গ্রামের ইদ্রিস আলী বলেন, “বানের পানি নামলেও ঘর থেকে পানি হরেনি। এহনও গরু ছাগল বউ পোনাই নিয়ে রাস্তায় আছি। ঘরের ভেতর থাইক্যা এহনও পানি নাই। বান শুরু হওয়ার পর থাইক্যা কামই উজগার নাই, আমগো নোক নাই তাই ইলিফ পাইনা। ইলিফ নিতে গেল সিলিপ চায় মেম্বর চেরম্যান। সিলিপ কই পামো। বউ পুনাই নিয়্যা খুব অসুবিতাত আছি।”

বনভাসী মানুষজনের দাবি, মেম্বার চেয়ারম্যানরা মুখ দেখে দেখে নিজস্ব লোকজনের নাম ত্রাণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। যাদের জানাশুনা নাই তাদের তালিকায় নাম উঠেনা। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন সরেজমিনে গিয়ে দেখে ত্রাণ বিতরন করলে বন্যা কবলিতরা সঠিকভাবে ত্রাণ পাবে বলেও তারা জানান। তারা বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের দাবি জানান।

জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, জেলার ৫টি উপজেলার ৩২ ইউনিয়নের ১৫৫টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছিল। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৭০১টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।

বন্যায় ইসলামপুর এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। উপজেলার আমনের বীজতলা, আউশ, সবজি, মরিচ, পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. জাকিয়া সুলতানা জানিয়েছে, জেলার প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সবজি, মরিচ এবং পাট নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয় ক্ষতির সার্বিক চিত্র জানাতে পারবেন বলে জানান তিনি।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বন্যাদুর্গতদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ৪৭০ মেট্রিক টন চাল, নগদ সাত লাখ টাকা ও চার হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা মনিটরিং করছি যাতে দুর্গত এলাকাগুলোতে সঠিকভাবে ত্রান তৎপরতা অব্যহত থাকে। পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করে বন্যা পুনর্বাসন কাজ শুরু করা হবে।

বৈশাখী নিউজ/ ফাজা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর