ঋণখেলাপিদের জন্য বড় ছাড় দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আপডেট: July 19, 2022 |

নিয়মিত ঋণকে খেলাপি করার প্রচলিত নীতিমালায় আরও বড় ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণের কিস্তির আকার ও পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে এখন আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই চলবে। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।

এসব ঋণ পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো। আবার নতুন করে ঋণও পাওয়া যাবে।

আব্দুর রউফ তালুকদার নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দেওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মাথায় বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন এই নীতিমালা জারি করেছে। নীতিমালায় খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করার পুরো ক্ষমতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ফলে ব্যাংকমালিকেরাই এখন ঠিক করবেন, তাঁরা ঋণখেলাপিদের কী সুবিধা দেবেন। আগে বিশেষ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগত, যা স্বয়ং গভর্নর অনুমোদন করতেন। নতুন গভর্নর দায়িত্ব নিয়ে সেই ক্ষমতার পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে তুলে দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃ তফসিল করতে বিভিন্ন তদবির আসত। এ কারণে নতুন গভর্নর সেই সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা ব্যাংকগুলোকে দিয়েছেন। পাশাপাশি করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্ষতিতে পড়া অর্থনীতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ঋণ পুনঃ তফসিলে ছাড় দিয়েছেন। না হলে বড় অঙ্কের ঋণখেলাপি হয়ে পুরো আর্থিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ত।

তবে খেলাপি ঋণে সুবিধা প্রদানের ক্ষমতা ব্যাংকমালিকদের হাতে তুলে দিলেও বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু এ–ও বলেছে, জাল জালিয়াতি ও অনিয়ম-প্রতারণার ঋণ নতুন নীতিমালার আওতায় নিয়মিত করা যাবে না। অবশ্য একটি ঋণ চার অর্থবছরের পর আরও একবার নিয়মিত করা যাবে।

এ ব্যাপারে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে বলেছে, কোভিড-১৯–এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ও বহির্বিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা চলছে। সে জন্য নতুনভাবে কোভিড-১৯–এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও শ্রেণিকৃত ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ঋণ পুনঃ তফসিলকরণ–সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, করোনার কারণে দেওয়া ছাড় উঠে যাওয়ার পর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। নতুন করে অনেক ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি করোনায় অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে যে এক লাখ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে, তারও বড় একটা অংশ অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। এ কারণে এখন ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, আজ থেকে খেলাপি ঋণ আর এক টাকাও বাড়বে না।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর