৭০ বছর পর ভারতের বনে ফিরে আসছে চিতা

গত ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো ভারতের কোনো বনভূমিতে আবার চিতার আবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে।

একসময় ভারত থেকে আরব উপদ্বীপ পর্যন্ত এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে এশিয়াটিক চিতার আবাসভূমি ছিল কিন্তু ভারতে ১৯৫২ সালে চিতাকে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়।

সাত দশক পর আফ্রিকা থেকে চিতা নিয়ে এসে আবার ভারতের একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ছাড়া হচ্ছে।

চিতা হচ্ছে মাটিতে বিচরণকারী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগামী – দৌড়ানোর সময় যার গতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৭০ মাইল (১১২ কিলোমিটার) পর্যন্ত উঠতে পারে।

আগস্ট মাসে নামিবিয়া থেকে মোট আটটি চিতা এনে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের কুনো-পালপুর জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হবে।

এই এলাকার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য চিতার বিচরণের অনুকুল বলেই এ জায়গাটি নির্বাচন করা হয়েছে।

পৃথিবীতে এখন প্রাকৃতিক পরিবেশে মাত্র ৭ হাজারের মতো চিতা টিকে আছে।

প্রাকৃতিক সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (আইইউসিএন) বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা প্রজাতিগুলোর যে লাল তালিকা করেছে, তাতে চিতাকে একটি বিপন্ন প্রাণী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এশিয়াটিক চিতা এক সময় আরব উপদ্বীপ থেকে শুরু করে আফগানিস্তান পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় বাস করতো। কিন্তু এখন শুধু ইরানে কিছু চিতা টিকে আছে বলে মনে করা হয়। ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা ২০২২ সালে জানিয়েছেন যে সেদেশে মাত্র ১২টি চিতা বেঁচে আছে বলে তাদের ধারণা।

ভারতে এক সময় প্রচুর চিতা ছিল। মুঘল সম্রাট আকবর- যিনি ১৫৫৬ থেকে ১৬০৫ পর্যন্ত ভারতে রাজত্ব করেছিলেন, তার সময় চিতার সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি ছিল বলে বলা হয়।

চিতা অত্যন্ত দ্রুত ছুটতে পারলেও অব্যাহত শিকার, প্রাকৃতিক আবাসস্থল নষ্ট হওয়া এবং খাদ্যের অভাবে ভারতে চিতা বিলুপ্ত হয়ে যায়।

ভারতে ১৯৫০ সাল থেকে চিতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছিল। ১৯৭০-এর দশকে ইরানে যখন প্রায় ৩০০ চিতা ছিল বলে মনে করা হয়, তখন ইরান থেকেও ভারতে চিতা আনার পরিকল্পনা হয়।

কিন্তু ১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবে শাহ ক্ষমতাচ্যুত হলে সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়। এখন যে চিতাগুলো আনা হচ্ছে তারা আসবে আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া থেকে।

পৃথিবীর যে দেশগুলোতে এখন সবচেয়ে বেশি চিতা বাস করে তার অন্যতম হচ্ছে নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বোটসোয়ানা।

খবর বিবিসি

বৈশাখী নিউজ/ বিসি