পুড়ছে ইউরোপ, নতুন অশনিসংকেত

আপডেট: August 13, 2022 |

ভয়াবহ দাবানলের বিরুদ্ধে লড়তে পুরো ইউরোপ থেকে অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে এসে জড়ো হয়েছেন। ঠিক একই সময়ে পর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক খরা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। ক্রমাগত দাবদাহে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নতুন করে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

ঝলসানো তাপমাত্রার মুখোমুখি অধিকাংশ ইউরোপ। জার্মানির রাইন নদীও পানিশূন্য হওয়ার পথে। নদীটির পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। আগের বছরগুলোর তুলনায় টেমস নদীর পানি অনেক বেশি শুকিয়ে গেছে। ফ্রান্সের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের জিরন্ডে নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। উচ্চ-তাপমাত্রা ও ক্রমবর্ধমান খরা ইউরোপকে অশনিসংকেত দিচ্ছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকদিন ধরে জ্বলতে থাকা দাবানল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পর রাতে বেলায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও এরইমধ্যে কয়েক হাজার হেক্টর বনাঞ্চল পুড়ে গেছে। ১০ হাজারের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।-খবর রয়টার্সের

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর বলছে, জার্মানি, রোমানিয়া, গ্রিসসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ থেকে অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা ফ্রান্সে জড়ো হয়েছেন। দেশটিতে দাবানল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে তারা সহায়তা করছেন।

জিরন্ডে অবস্থান করা রোমানীয় অগ্নিনির্বাপণকর্মী ক্রিস্টিয়ান বুহায়নু বলেন, কোন দেশে আছি; তা কোনো ব্যাপা না, আমরা অগ্নিনির্বাপণকর্মী। আমরা এখানে সহায়তা করতে এসেছি।

গত মাসে একটি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসায় ইউরোপীয় অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ফরাসি কমান্ড্যান্ট স্টেফানি মার্টিন। তিনি বলেন, দীর্ঘ এক মাসের পরিশ্রমের পর আমাদের কর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এটি আমাদের জন্য ভালো সহায়তা। এখন আমরা অন্য দিকে মনোযোগ দিতে পারব।

ফ্রান্সের তৃতীয় দাবানল রোববার শেষ হয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যা নাগরিকদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসতে পারে। এরইমধ্যে বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ রেখে গেছে আগুন। খবরে বলা হয়, ফ্রান্সে দাবানল সাত হাজার ৪০০ হেক্টর বনাঞ্চল পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। যা আয়তনে নিস শহরের সমান হবে।

অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের ভাষায়, দানবীয় দাবানলে মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। জিরন্ডের কেন্দ্রস্থলে বাস করা ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী জুলিয়েত পিলেইনে বলেন, আগুনে আমাদের পূর্বসূরিদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের পরিবার বহু বছর ধরে এই বাড়িতে বসবাস করেছেন। আমার দাদা-দাদির জন্য এই খবর খুবই কষ্টদায়ক।

পর্তুগালের কেন্দ্রস্থলে গেল সাত দিন ধরে ফুঁসছে আগুন। ১৩টি জলবোমা-বিমান ব্যবহার করে আগুনের বিরুদ্ধে লড়ছেন এক হাজার ৬০০ অগ্নিনির্বাপণকর্মী। এগুলোর মধ্যে একটি পাঠানো হয়েছে স্পেন থেকে। আগুনে এরইমধ্যে ইস্ট্রেলা জাতীয় পার্কের পনেরো শতাংশ ধ্বংস করে দিয়েছে।

শনিবার কোভিলহা এলাকায় আগুন শুরু হওয়ার পর তা পার্শ্ববর্তী কাউন্সিলগুলোতেও ছড়িয়েছে। এসব অঞ্চলের ১৫ হাজার হেক্টর বনভূমি পুড়ে গেছে। এদিকে জার্মানির রাইন নদীর পানির স্তর নেমে গেছে। এতে নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ব্রিটেনেও দাবানল চরমমাত্রা পেয়েছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী খরা ঘোষণা করা হয়েছে। উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর