আধা কিলোমিটার লম্বা কাগজে কোরআন লিখে বিশ্বরেকর্ড

প্রায় আধা কিলোমিটার গোটানো লম্বা কাগজে নিজ হাতে কোরআন লিখে বিশ্বরেকর্ড করেছেন কাশ্মীরের ২৭ বছরের মুস্তাফা ইবনে জামিল। এতে তার সময় লেগেছে প্রায় সাত মাস। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এ খবর জানানো হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সাত মাস ধরে ৫০০ মিটার লম্বা একটি গোটানো কাগজ বা স্ক্রলে তিনি পবিত্র কোরআন লিখেছেন। এই বিশ্বরেকর্ড গড়ার পর বর্তমানে গুরেজের বাসিন্দা মুস্তাফা জামিল তার স্থানীয় ভাষা শিনা-তে কোরআন অনুবাদ করছেন।

লিংকন বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড জানিয়েছে, একটি নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরি হলো, বিশ্বে কেউ প্রথমবার কোরআনকে মাত্র ১৪ দশমিক ৫ ইঞ্চি চওড়া এবং ৫০০ মিটার লম্বা স্ক্রল পেপারে লিখলেন।

জামিল বলেন, ‘এত বড় কাজের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পাওয়াটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি কাশ্মীরে খুঁজেছিলাম পাইনি। তাই দিল্লিতে যেতে হয়েছিল। কাজ শেষ করার পর আমি বাড়ি ফিরেছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার হাতের লেখার উন্নতির জন্য ক্যালিগ্রাফি চর্চা শুরু করি। সেজন্য আমি অল্প অল্প করে কোরআনের আয়াত লেখা প্র্যাকটিস করতাম। আর তখন থেকেই মাথায় আসে কোরআন লেখার বিষয়টা। আমি প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা করে কোরআন লিখতাম।’

মোহাম্মদ কাশিম নামে একজন বলেন, ‘এখানকার লোকজন চিন্তাও করতে পারবে না কোরআন কীভাবে লেখা হয়েছে, তৈরি করা হয়েছে। এই লোকটি ইতিহাস গড়েছে।’

জামিল জানান, কাশ্মীরে ক্যালিগ্রাফি হারিয়ে যাচ্ছিল। তবে জামিল তার কাজ দিয়ে অন্যদের উৎসাহ দিতে চান। ভবিষ্যতে এমন আরও কাজ করতে চান।

এই প্রজেক্টের জন্য জামিলকে দিল্লি আসতে হয়েছিল, যেহেতু কাশ্মীরের ওই প্রত্যন্ত এলাকায় কাগজ পাওয়া যায় না। অন্যদিকে এই কাজের কাঁচামালকে দিল্লি থেকে বয়ে শ্রীনগরও নিয়ে যেতে পারেননি ওজনের জন্য। তাই দিল্লিতে থেকেই তিনি কাজটি করেছেন।

দুই মাস ধরে তিনি যাবতীয় জিনিস জোগাড় করেছেন। তারপর প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করে মাত্র সাত মাসেই এ প্রজেক্ট শেষ করেছেন। তিনি এ কাজটিতে ১৩৫ জিএসএম কাগজ ব্যবহার করেছেন। এই প্রজেক্টটিতে তার খরচ হয়েছে মোট ২ দশমিক ৫ লাখ টাকা। এক মাস সময় লেগেছে এই স্ক্রলটিকে বাঁধাতে।

তিনি এশিয়ান বুক অব রেকর্ড, ইন্ডিয়ান বুক অব রেকর্ড এবং ইন্টারন্যাশনাল বুক অব রেকর্ডেও নিজের নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। আপাতত সেগুলোর এখন ডকুমেন্টেশন চলছে।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা