চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আপডেট: October 10, 2022 |

বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ২৮তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ সোমবার। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।

শিল্পীর মৃত্যু বার্ষিকীকে ঘিরে জেলা প্রশাসন, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন, সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

তবে চির কুমার এস এম সুলতানকে মৃত্যুর আগ পর্যন্তু যে মানুষটি আদর, স্নেহে, মায়া-মমতা দিয়ে আগলে রেখেছিলেন কেমন আছেন সেই নিহার বালা? এক কথায় না মোটেও ভালো নেই সুলতানের পালিত কন্যা নিহার বালা। অন্ধত্ব বরণ করে, রোগ শোকে জীবন এখন আর চলেনা। সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে জীবন-মৃত্যুর ক্ষণ গুনছেন তিনি।

নিহার বালার মেয়ের ছেলে নয়ন বলেন, বোহেমিয়ান-ভবঘুরে সুলতানকে শিল্পকর্মে মনোনিবেশ করার জন্য যে মানুষটি তার পাশে ছায়ার মত ছিলেন তিনিই তার পালিত কন্যা নিহার বালা। তার জন্যই আমরা পেয়েছিলাম সুলতানের বিশ্ব মানের সব চিত্র কর্ম।

সুলতান ভক্ত শেখ হানিফ বলেন, সুলতানের জন্ম-মৃত্যু বার্ষিকীতে লাখ-লাখ টাকা খরচ করে অনুষ্ঠান করা হয়। অথচ শিল্পকলা একাডেমি থেকে নিহার বালার জন্য ৫ হাজার টাকা এবং জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে দেয়া হয় আরও ৫ হাজার টাকা, এই ১০ হাজার টাকায় চলে নিহার বালার ওষুধসহ অন্যান্য খরচ। যা খুবই সামান্য।

এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের কিউরেটর তন্দ্রা মুখার্জী বলেন, এস এম সুলতানের সকল বিষয়ে তার থেকে ভালো আর কেউ জানত না। সুলতানকে জানতে হলে নিহার বালাকে অবশ্যই জানতে হবে। তিনি মায়ের মত করে আগলে রেখেছিলেন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োাজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এসএম সুলতান। শিল্পীর মৃত্যুর পর স্মৃতি সংগ্রহশালা, শিশুস্বর্গ নির্মাণ, আর্ট কলেজসহ বেশ উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি নড়াইলবাসীর কাছে ‘লাল মিয়া’ বলে পরিচিত। বরেণ্য এই শিল্পীর মৃত্যুর পর তার বাসভবন ঘিরে গড়ে উঠেছে সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা, শিশুস্বর্গ, কলেজসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড “ধানকাটা”, “ ধান ঝাড়া”, “ জলকে চলা”, “ চর দখল”, “গ্রামের খাল”, “মৎস শিকার”, “গ্রামের দুপুর”, “নদী পারা পার”, “ধান মাড়াই”, “জমি কর্ষনে যাত্রা”, “মাছ ধরা”, “নদীর ঘাটে”, “ধান ভানা”, “গুন টানা”, “ফসল কাটার ক্ষণে” , “শরতের গ্রামীণ জীবন”, “শাপলা তোলা” মত বিখ্যাত সব ছবি।

চিত্রশিল্পের অনন্য অবদানের জন্য এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮৪ সালে রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননাসহ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার পেয়েছেন।

এদিকে, ২০০১ সাল থেকে সুলতান ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একজন গুণী চিত্রশিল্পীকে সুলতান পদক দেয়া হচ্ছে।

বরেণ্য এই শিল্পী অসুস্থ অবস্থায় ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রিয় জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রাম এলাকায় সংগ্রহশালা চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এসএম সুলতান।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর