তানোরের এমপিকে কটুক্তি করে তোপের মুখে রাব্বানী

আপডেট: February 24, 2023 |

আলিফ হোসেন,তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীকে কটুক্তি করে জনগণের তোপের মুখে গোলাম রাব্বানী দিশেহারা পড়েছে। এতে তিনি নিজ ঘরেই পরবাসী।

স্থানীয়রা বলছে, রাজনৈতিক ভাবে চরম দেউলিয়া হয়ে তার হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে। যে কারণে কাকে কি বলতে হবে সে বোধদয় লোপ পেয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হয়ে নৈতিকভাবে তিনি  দলীয় এমপিকে কি কটুক্তি  করতে পারেন ?

এদিকে নিজ দলের এমপিকে কটুক্তি করায় রাব্বানীর বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মী বিক্ষুব্ধ হয়েছে, বিরাজ করছে বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতি।

সম্প্রতি বে-সরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে গোলাম রাব্বানী কটুক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন।

জানা গেছে, সাংসদ ফারুক চৌধুরী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আর রাব্বানী ছিলেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর এমপির নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তার দিকনির্দেশনায় রাজনীতি করেছেন। এখন তিনি সেই এমপিকে কটুক্তি করেন কি বিবেচনায়, এমপি যদি খারাপ ব্যক্তি হন।

তাহলে তার নেতৃত্ব  মেনে তিনি কি বিবেচনায়  একই সঙ্গে কুড়ি বছর রাজনীতি করলেন কি বিবেচনায়  এমপিকে ফেরেস্তার সঙ্গে তুলনা করে তার জন্য ভোট চেয়েছেন।

তখন কেনো তিনি দলীয় পদ ছেড়ে ও এমপির খারাপ দিক তুলে ধরে বিরোধীতা বা দলের নীতিনির্ধারণী মহলে নালিশ করলেন না।

পদপদবী হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে এখন এমপিকে কটুক্তি করছেন। সাধারণ মানুষের কাছে তার কথা কি বিশ্বাসযোগ্য।এছাড়াও দলীয় এমপিগণ সরাসরি দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি।

তাহলে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত্ব ব্যতিত দলীয় এমপিকে কটুক্তি করা মানে তো প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তির সামিল।

আবার এমপি হবার খোয়াব দেখে দলীয় এমপিকে কটুক্তি করে রাব্বানী কি বোঝাতে চাই। বিতর্কের খাতিরে যদি ধরেই নেয় গোলাম রাব্বানী দলীয় মনোনয়নে পাবেন, তাহলে কি তিনি এমপি ফারুক চৌধুরী ছাড়াই নির্বাচনে বিজয়ী হবেন ? সেটা কি সম্ভব ? যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে রাব্বানী কার স্বার্থে এমপিকে নিয়ে কটুক্তি করছেন।

স্থানীয়রা জানান, তিনি দুবার দলীয় মনোনয়নে উপজেলা নির্বাচন করে বিএনপির দুর্বল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন।

আবার এমপির দয়ায় তিনি দুবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুবার মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র হয়েছেন।

কিন্তু দুবার উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হলেও হঠাৎ এমপি হবার খোয়াব দেখে রাজনীতিতে দেউলিয়া হয়ে সভাপতির পদ হারিয়েছেন।

প্রশ্ন হলো যে ব্যক্তি দলীয় মনোনয়নে দুবার উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়, যিনি দলের উপজেলা কমিটির সভাপতি পদ ধরে রাখতে পারেন না তিনি কি বিবেচনায় এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন।

আবার যে ব্যক্তি দলীয় মনোনয়নে দুবার উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন, উপজেলা কমিটির সভাপতির ধরে রাখতে ব্যর্থ সেই ব্যক্তিকে কি বিবেচনায়  দল এমপির মনোনয়ন দিবেন ?

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে গোলাম রাব্বানীকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ক্ষোভ-অসন্তোষের মাত্রা বাড়ছে। স্থানীয় সাংসদ ও গণমানুষের নেতা আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে কটুক্তি করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

এমপিকে নিয়ে এমন বেফাঁস মন্তব্য করে রাজনীতির মাঠে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে গোলাম রাব্বানী বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য, গোলাম রাব্বানীর এমপি হওয়া আর কুঁয়োর ব্যাঙের সমুদ্র জয় একই ঘটনা।

কারণ ইউপি চেয়ারম্যান থেকে মেয়র হবার পর গোলাম রাব্বানী মনে করেছিল মুঁই কি হুনোরে। কুঁয়োর ব্যাঙ কুড়িতে গেলে মনে করে মুঁই কি হুনোরে।

অথচ কুড়ির পরে আছে পুকুর-দিঘি, খাল-বিল, নদী-সাগর তার পর মহাসাগর। কিন্ত্ত কুঁয়োর ব্যাঙ সর্বোচ্চ পুকুরে যেতে পারে। হাওড়-বাওড়, বিল-নদীতে তার লড়াই করে টিকে থাকার ক্ষমতা নাই, সাগর-মহাসাগর তো পরের কথা।

এদিকে আওয়ামী লীগ  ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গোলাম রাব্বানীর বক্তব্য প্রত্যাহার, প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি করেছেন।

এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও গোলাম রাব্বানীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর