সিলেট সিটি নির্বাচন: কোন পথে হাটবেন মেয়র আরিফ?

আপডেট: May 18, 2023 |

মিজান মোহাম্মদ, সিলেট প্রতিনিধি : শেষ পর্যন্ত কি জমে ওঠবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন? নাকি একপেশে হয়ে যাবে? এমন দোলাচলে ঝুলছে দেশবাসীর বুক।

কিন্তু এই মুহুর্তে এই প্রশ্ন বা আকাঙ্ক্ষার উত্তর পাওয়া কঠিন। তাই ২০ মে তে পাখির চোখ করে আছে দেশবাসী। একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচনী মাঠ-ঘাট চষে বেড়ালেও জাতীয় পার্টির বার বার ভাঙাগড়া খেলার তাদের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ও সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুলের প্রতি আগ্রহ নেই ভোটারদের।

তাই নির্বাচনকে জমিয়ে তুলতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও দুইবারের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিকল্প নেই।

আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন ও কাউন্সিলর পদে ৪৪৩ জন প্রার্থী রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মোট ৪৪৩ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮, সাধারণ ওয়ার্ডে (পুরুষ) ৩৪৫ ও সংরক্ষিত (নারী) ওয়ার্ডে ৯০ জন কিনেছেন মনোনয়ন।

গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন প্রার্থীরা। সংগ্রহ করা যাবে ২৩ মে পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মোট ৪৪৩ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮, সাধারণ ওয়ার্ডে (পুরুষ) ৩৪৫ ও সংরক্ষিত (নারী) ওয়ার্ডে ৯০ জন কিনেছেন মনোনয়ন।

গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন প্রার্থীরা। সংগ্রহ করা যাবে ২৩ মে পর্যন্ত।

মনোনয়ন সংগ্রহের তালিকায় নেই শুধু বিরোধী প্রধান দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীর নাম।

ক্ষমতায় থাকাবস্থায় শাসকদল আওয়ামী লীগের তিন তিনবারের জননন্দিত মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে একাধারে দুই বার পরাজিত করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এবং বর্তমানেও রয়েছেন মেয়র পদে সমাসীন।

তাঁর দ্বিতীয় দফার মেয়দ শেষে আগামী ২১ জুন সিসিক নির্বাচন।

আসন্ন নির্বাচনেও প্রথমাবস্থায় মেয়রপদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন আরিফ। কিন্তু তাঁর এ আগ্রহে তুমুল বাধা হয়ে দাঁড়ায় নিজদল বিএনপি।

দলীয় সিদ্ধান্ত বর্তমান আওয়ামী সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনেই যাবে না বিএনপি। এতে করে তুমুল হোঁচট খেয়ে যান মেয়র আরিফ।

নিজের আগ্রহ ও নির্বাচনী তফসীল ঘোষনাকে সামনে রেখে ইংল্যান্ড সফর করেন তিনি। কিন্তু ইতিবাচক কোনো নির্দশনা ও ঘোষণা নিয়ে আসতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে নিজ দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত নেতার একটি সিগন্যাল আছে এবং সময়মত তা’ বলবেন । এমন বক্তব্যের মধ্যদিয়ে নির্বাচনে নিজের প্রিার্থিতার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে চলছেন তিনি।

ফলে তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে নগরবাসী ধূম্রজালে পড়ে থাকেন। এরই মাঝে একদিন ইভিএম ভোট নিয়ে নেতবিাচক সূরও দেন তিনি।

এ অবস্থায় গত ১ মে শ্রমিক দিবসের সমাবেশে মেয়র আরিফ আগামী ২০ মে জনসভা করে সবার সামনে ব্যাখ্যাসহ তার মত ও সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

তখন থেকেই নগরবাসী অধীর আগ্রহে রয়েছেন ২০ মে’র অপেক্ষায়।

এদিকে বুধবার দ্বিতীয় দফায় আবারো নিজ দলীয় বাধার মুখে পেড়েছেন আরিফ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতিবাচক কঠোর নির্দেশনাই নির্বাচনে তার জন্য প্রধান বাঁধা।

তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই গুঞ্জন ছিলো- সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে নাগ‌রিক সমা‌জের ব্যানা‌রে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে যাচ্ছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

কিন্তু এ চিন্তা, এ ভাবনায় তিনি বারবার হোঁচট খাচ্ছেন দলের মূল নীতি নির্ধারক তারেক রহমানের অনমনীয় সিদ্ধান্তে।

সূত্রমতে নগরবাসী আগামী ২০ মে’র ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন। এ অবস্থায় বুধবার (১০ মে) সন্ধ্যরাতে সিলেট মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে ঢাকায় সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় সিলেট মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তারেক রহমান নেতৃবৃন্দকে এ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেন।

সন্ধ্যা ৭টা থেকে ঘণ্টাব্যাপি স্থায়ী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব।

দলের হাইকমান্ডের এমন কঠোর নির্দেশনায় ২০ মে নগরবাসীকে কী সিদ্ধান্ত জানাবেন আরিফুল হক চৌধুরী। এটাই এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়।

১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর সিলেট নগরের কুমারপাড়ায় জন্ম নেওয়া বর্তমান সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন ছাত্রদলের সদস্য থেকে শুরু।

ক্রমান্বয়ে তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সভাপতি হয়ে বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।

গত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে আরিফুল হক সিলেটে সিটি কর্পোরেশনের একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নিরর্বাচিত হয়েছিলেন।

এর পর চলমান আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে দুই দুইবার (২০১৩ ও ২০১৮) সিসিক নির্বাচনে সরকার দলের নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র পদে নগরভবনের মসনদ দখলে নেন তিনি।

কিন্তু এবার দেশর বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলীয় পদ ও অবস্থান রক্ষা করে মেয়র পদে প্রার্থী হতে পারবেন না, এটা একেবারে নিশ্চিত।

দলীয় বাঁধা বিপত্তিকে ডিঙ্গিয়ে বা দল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে আসন্ন সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে তিনি স্বতন্ত্র প্রাথী হতে পারবেন কি না ? আগামী ২০মে সে প্রশ্নের আনুষ্ঠানিক জবাব জানার অপেক্ষায় নগরবাসী।

সেদিন তাঁর ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক ঘোষণার মধ্যদিয়ে অবসান ঘটবে মেয়র আরিফের নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট ধূম্রজালের।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর