জয়পুরহাটে কলা চাষীরা এখন সাবলম্বী

আপডেট: May 27, 2023 |

এম.এ.জলিল রানা,জয়পুরহাট সংবাদদাতা :  জয়পুরহাটে কলা চাষীরা এখন সাবলম্বী।এজন্যই খনার বচনে বলা হয়েছে (কলা রুয়ে যদি না কাটে পাত,তাতেই কাপড় তাতেই ভাত) তাইতো কলা চাষ করে ভাগ্য বদলের পথে এ জেলার কলা চাষিরা। রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের প্রায় ৩৫টি জেলায় যাচ্ছে এখানকার কলা। পরিবারের ভরন পোষন করার পরেও আর্থিভাবে লাভবান হওয়ায় সম্প্রতি এ জেলায় জনপ্রিয় হয়েছে কলা চাষাবাদ।

এ জেলায় প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে স্থান পেয়েছে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একলা। জেলায় বিশেষ করে জামালগঞ্জ ও ভাদসা এলাকার বেশিরভাগ পরিবারই এখন কেবল কলা চাষাবাদের উপর নির্ভরশীল।চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে অনেক বেশী লাভ কলা চাষে। বিশেষ করে যমুনা সেতু চালু হওয়ায় পর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল ফলে স্থানীয় চাহীদা মিটিয়ে এ জেলার কলা এখন দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পুরনে ব্যস্তা। তাইতো জেলার জামালগঞ্জে ও ভাদসা ইউপি ভবনের সামনে দূর্গাদহ বাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে কলার বিস্ময়কর বাজার।

অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কলার চাষও এখন বেশ জনপ্রিয় ও লাভজনক সে কারনেই দিন দিন এ ফসল চাষাবাদে ঝুকছে চাষিরা। ২/৩ ফুট লম্বা লাগানোর অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়। সাধারনত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপণ করলে অগ্রহায়ণ মাস থেকে ফল পাওয়া শুরু হয়। যেসব জমিতে বর্ষার পানি এক সপ্তাহের বেশি জমে থাকে না সে সকল জমি কলা চাষের জন্য ভালো।

কৃষকের তথ্য মতে , প্রতি বিঘা জমিতে কলার জাত ভেদে ৩শ-সাড়ে ৩শ চারা রোপণ করা হয়। পরিচর্যা ভাল করলে প্রতি গাছে ২- আড়াই মন কলা পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমি কলা চাষে করচ হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা কলা বিক্রি হয় ১- দেড় লাখ টাকা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, জেলায় চলতি মেীসুমে ৮শ ৫০ হে: জমিতে কলা চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার মে: টন।

জামালগঞ্জ এলাকার মাতাপুর গ্রামের কলা চাষী আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে কলা চাষ করে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় প্রায় লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে ।

নুনুজ গ্রামের আর এক কলা চাষী নূর আলম জানিয়েছেন, কলা বিক্রিতে কোন ঝামেলা হয় না।পাইকাররা জমি থেকেই কলা নিয়ে যায়। এছাড়াও জামালগঞ্জে ও ভাদসা দূর্গাদহ বাজারে কলার বিশাল হাট বসে প্রতি দিন সকালে ৬০-৭০ জন আড়ৎদার কলা কিনেন।তিনি আরও জানান, প্রতি কাইন ( স্থানীয় নাম ঘাউর) বিক্রি হচ্ছে চাপা কলা ২৫০-৩৫০, সবরি কলা ৫০০-৬০০, সাগর ও রঙ্গিন মেহের সাগর কলা প্রতি কাইন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

এখন অফ সিজন তার পরেও এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬-৭ ট্রাক কলা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে জানিয়েছেন এস এ ট্রেডার্সের মালিক ও কলা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম।প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার কলা কেনা বেচা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কলা ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, এ জেলার কলা উন্নত মানের হওয়ায় চাহিদা অনেক এবং কলা বেচা-কেনার সাথে জরিত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক।

বর্তমানে জেলার স্থানীয় হাটবাজারে প্রকার ভেদে বা সাইজ অনুযায়ী সবরি কলা ৩৫-৪০ টাকা হালি এবং চাম্পা ও সাগর কলা ১৫-২০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

কলা চাষাবাদ বেশ লাভজনক ফসল হওয়ায় জেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার কলা চাষাবাদের সাথে জড়িত। কলা চাষাবাদে সাথে জরিত কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর