জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে বগুড়ায় নেওয়ার পথে মারা গেল ৪ হরিণ

আপডেট: September 11, 2023 |
inbound2076150115609556683
print news

শাহজাহান আলী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে কিনে নিয়ে আসার পথে বগুড়ার বেসরকারি সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএসের) পাঁচটির হরিণের মধ্যে ৪টি হরিণেই মারা গেছে।

এই মৃত্যুর জন্য অ্যানেস্হেসিয়ার (আবেদন) প্রভাবকে দায়ী করেছে টিএমএসএসের পশু অভয়ারণ্যের কর্তৃপক্ষ।

সোমবার ( ১১সেপ্টম্বর) বিকালে হরিণগুলোর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করের টিএমএসএস পশু অভয়ারণ্যের নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাকিম আহম্মেদ শাহী।

জানা গেছে, রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে চিত্রা প্রজাতির হরিণগুলো ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে বগুড়ায় এসে পৌঁছায়। তখন খাঁচার মধ্যে ৪টি হরিণকে মৃত্যু অবস্থায় পাওয়া যায়।

এর আগে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ট্রাকে করে হরিণগুলো বগুড়ার ঠেঙ্গামারা সবুজ সংর্ঘে পাঠানো হয়। একইভাবে চলতি বছরের মে মাসেও একই সংস্থার ক্রয় করা ৩টি হরিণ পরিবহনের সময় মার গিয়েছিল।

টিএমএসএসের পশু অভয়ারণ্যে সূত্র জানায়, বগুড়ার নওদাপাড়ায় টিএমএসএস তাদের বিনোদন পার্কে একটি বেসরকারি পশু অভয়ারণ্যে বা চিড়িয়াখানা গড়ে তুলেছে।

সেখানে ৯০ শতক জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে হরিণ প্রতিপালন বিভাগ। চলতি বছরে হরিণ প্রতিপালনের জন্য সংস্হাটি লাইসেন্স পায়।

লাইসেন্স পাওয়ার পর তারা এখন পর্যন্ত জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে দুই চালানে মোট ১১টি হরিণ কিনেন।

প্রতিটি হরিণের মূল্য ধরা হয় ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা।

টিএমএসএস পশু অভয়ারণ্যের নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাকিম আহম্মেদ শাহী জামান,রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ৫টি হরিণকে অ্যানেস্হেসিয়া করে খাঁচায় তোলা হয়।পরে খাঁচাসহ ট্রাকটি বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।

পথে সাভারে থাকতেই ১টি হরিণ মারা যায়। আর রাত আড়াইটার দিকে আমরা যখন খাঁচা নামাই, তখন মোট ৪টি হরিণকে মৃত পাই। একটি হরিণ সুস্হ আছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে ২৮ মে জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ৬টি হরিণ ক্রয় করা হয়। কিন্তু হরিণ হস্তান্তের সময় অ্যানেস্হেসিয়া করার সময় তাদের হাতেই ২টি হরিণ মারা যায়। পরিবহনের সময় আরও ১টি মারা যায়।

ওই দুইটির পরিবর্তে ২৬ জুন আমাদের আরও ২টি হরিণ পাঠিয়ে দেয় জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আমাদের কাছে আনার পর একটি হরিণ বাচ্চা প্রসব করেছে।

এ নিয়ে এখানে মোট ৭টি হরিণ রয়েছে টিএমএসএস চিড়িয়াখানায়। এভাবে দুই দফায় হরিণ মৃত্যুর কারণে জাতীয় চিড়িয়াখানা কতৃপক্ষকে দুষছে টিএমএসএস।

এ বিষয়ে মোস্তাকিম আহম্মেদ শাহী জানান, তাদের কাছ থেকে হরিণ নেওয়া হচ্ছে, অথচ তারা কোনো গাইড লাইন বা পরামর্শ কিছুই দেয়নি।

হরিণ অত্যন্ত সেনসেটিভ (সংবেদনশীল) প্রাণী।কিন্তু তাকে অ্যানেস্হসিয়া করছেন তারা,সেটার প্রয়োগমাত্র ঠিক আছে কি না কিছুই আমরা জানি না। কিন্তু আমরা দেখছি নিয়ে আসার পর হরিণগুলো খুবই দুর্বল থাকে।

এজন্য মনে হয় অ্যানেস্হেসিয়ার মাত্রা বা এই কাজের ব্যবস্হাপনায় ঘাটতি আছে।

এ বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার ভেটেনারি সার্জন ডা. নাজমুল হুদা জানান,গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রায়ই হরিণ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

চিত্রা হরিণ অনেক সেনসেটিভ (সংবেদনশীল) এদেরকে অতিরিক্ত কোনো অ্যানেস্হেসিয়া দেওয়া হয় না। দেখা যায়, ১০টি পাঠালে তিনটিই মারা যায়।

বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোশারফ হোসেন জানান, খবর পেয়ে সদর উপজেলার একটি টিম গিয়েছিল ঘটনাস্থলে।

হরিণ ভয় পেলে, তাকে ধরতে গেলে হার্টঅ্যাটাক করে। এই প্রাণীটি খুবই নাজুুক। আর পরিবহনের সময় তো ঝাঁকুনি লাগেই লাফালাফি করেছে। এসব থেকে মারা গিয়ে থাকতে পারে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর