নুসরাত হত্যা: দু’একদিনের মধ্যে চার্জশিট
ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা মামলার চার্জশিট দু-একদিনের মধ্যে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল। রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
পুলিশ সুপার মো. ইকবাল বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। ৩০ মের মধ্যে চার্জশিট দেয়া হবে। তবে ঠিক কতজনের নামে চার্জশিট দেয়া হবে তা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মো. ইকবাল আরও বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পিবিআই নুসরাত হত্যায় ব্যবহৃত বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিট প্রদানের জন্য পিবিআই নিরলসভাবে কাজ করেছে। ঠিক কবে নাগাদ চার্জশিট দেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মাসের মধ্যেই এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।
নুসরাত হত্যা মামলায় গ্রেফতাররা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, ইফতেখার হোসেন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নুসরাতের মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।