মানিকগঞ্জ-২: স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে দুই ভাই


সোহরাব হোসেন, সিংগাইর প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর ও সদরের আংশিক ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আপন চাচাতো দুই ভাই।
একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়া সংগঠক ও আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল।
অপরজন জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু। এদের মধ্যে টুটুল বড় ।
প্রার্থীদ্বয় নৌকা প্রতীক চেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। এ আসনে তৃতীয় বারের মতো নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে।
তবে হেভিওয়েট ও ক্লিন ইমেজ সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে সংসদীয় আসনে দু‘জনেরই রয়েছে সুনাম ও খ্যাতি। পারিবারিক ঐতিহ্যও কম নয়।
গণভবনে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার বক্তব্য অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে দলের বাঁধা না থাকায় দুই ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাত- দিন মাঠে কাজ করছেন।
বড় ভাই দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল ২৫ বছর যাবত এ সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগের একজন ত্যাগী,দক্ষ, আদর্শবান সাংগঠনিক নেতা হিসেবে কাজ করছেন।
অধুনালুপ্ত মানিকগঞ্জ-৪ ( সিংগাইর-সদর) আসনে ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থীর সাথে ককফাইট দেন তিনি।
আসন পূনর্বিন্যাসের পর ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েও দলের সিদ্ধান্তে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস এম আব্দুল আব্দুল মান্নানের সমর্থনে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন টুটুল।
ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খান রিতাকে পরাজিত করে এসএম আব্দুল মান্নান এমপি নির্বাচিত হন।
এর পর কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হয়ে ২০১৪ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও ২০১৮ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
দু’বারের মনোনয়ন বঞ্চিত টুটুল কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও বাদ পড়েন। মমতাজের একচ্ছত্র রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন টুটুল অনুসারীরা।
অনেকেই হামলা-মামলার শিকারও হন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেওয়ান সফিউল আরফিন টুটুল দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ায় তার কর্মী সমর্থকরা হতাশ হলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিরলস ভাবে মাঠে কাজ করছেন।
অপরদিকে, দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু নির্বাচনী এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে এতিমখানাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদান, গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়া, দুস্থ ও অসহায় পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে তিনি এলাকায় বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন।
অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি আওয়ামীলীগের জেলা কমিটিতে কোষাধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরু করে এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
সে অনুযায়ী খুব জোরে শোরে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টুটুল ও টুলু একট্রা হয়ে একক প্রার্থী হলে সংসদ সদস্য পদটি তাদের ঘরে ওঠবে।
আর দু’জনেই নির্বাচনী মাঠে থাকলে ভোট ভাগাভাগির কারণে উভয়ের কুপোকাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু দলের জন্য বড় ভাই টুটুলের অনেক অবদানের কথা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাইড লাইন অনুযায়ী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছি।
আশা করি, মামী-ভাগিনালীগ থেকে স্থানীয় আ.লীগকে মুক্ত করে জনগণের দলে পরিণত করতে টুটুল ভাই অতীতের মত আমার সাথে থেকে বটবৃক্ষের ছায়া হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন ।
তবে আমাকে সমর্থন দিয়ে তিনি যদি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন তাহলে জয় তার সুনিশ্চিত বলেও টুলু জানান ।
এ ব্যাপারে দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল বলেন, দুই ভাই এক হয়ে নির্বাচন করলে জয় সুনিশ্চিত, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। নো ডাউট। টুলুর সাথে থাকা অন্যরা আসলে এটা হতে দিবে না।