ফ্যাসিজমের প্রেতাত্মারা ছাত্র-জনতার বিজয়কে ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিজমের অনেক প্রেতাত্মা অবস্থান করেছে, তারা এখনও ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করতে না ষড়যন্ত্র করেছে। এ জন্য নেতাকর্মীদের সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে ভার্চুয়ালি বক্তব্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন সঞ্চালনা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সব সময় গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে। শুধু ৫২, ৭১ নয়। গণতন্ত্র যেন সাসটেইনেবল হয় সেজন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, সেটি যেন হেলায় হেলায় ফেলে না দেই।
বর্তমান সরকারের কাছে আন্দোলনে প্রতিটি আহত, পঙ্গু ও শহীদদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য দাবি করে বিএনপি মহাসচিব।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, একদলীয় শাসনকে বিতাড়িত করে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। খালেদা জিয়া কেয়ারটেকার ব্যবস্থা করে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আবারও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার কাজে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করতে চাই, অবিলম্বে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি সংসদে পাঠাবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার দেশ ছেড়ে কখনও পালিয়ে যায়নি। তিনি বলেছিলে তার বিদেশে কোনো বাড়ি-গাড়ি নেই। অথচ আজকে একজন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এখন বলছেন চট করে দেশে ঢুকে যাবেন। নানা ষড়যন্ত্র করে চলেছেন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, সব সংস্কার অন্তবর্তী সরকার করতে পারে না। কিন্তু রাজনৈতিক দল তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। সংস্কার শেষে তাদেরকে নির্বাচন দিতে হবে। আওয়ামী লীগের আমলের প্রতিটি গুম খুনের বিচার করতে হবে।
জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ও জনগণের দল। বিএনপি ইতিহাস হচ্ছে জনগণের পাশে থাকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের অধিকার ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যার্বতন নিশ্চিত করতে হবে।
দুপুর আড়াই ওলামা দলের আহ্বায়ক কাজী মো. সেলিম রেজার কোরাআন তেলাওয়াত পরিচালনায় মাধ্যমে সমাবেশে শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেন অঙ্গ ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টন ও এর আশাপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
স্লোগানের স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত করে তোলেন নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, পুরানা পল্টন, কাকরাইল এলাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে ঢাকার বাইরে থেকে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল নেতাকর্মীরাও নিয়ে মিছিল যোগ দেয়। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতাকর্মীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।