জনপরিসরে ‘স্মোকিং জোন’ বিলুপ্তির প্রস্তাব

আপডেট: September 19, 2024 |
IMG 20240919 WA0086
print news

 

সকল প্রকার জনপরিসরে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করাসহ ছয় দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র–ডর্‌প।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে তামাক বিরোধী ক্যাম্পেইনে তরুণ প্রতিনিধিদের অ্যাডভোকেসি বিষয়ক আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। কর্মশালায় ৩০ জনের অধিক তরুণকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এই কর্মশালা মাসব্যাপী চলমান রয়েছে।

সংস্থাটির অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলো হলো: তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা; তামাক পণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা; এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কতার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিভিন্ন তামাকজাত পণ্যকে রুখে দিতে নানান গঠনমূলক আলোচনা ও অংশগ্রহণকারী যুবদের নিয়ে আগামী তিন মাসের কর্মকাণ্ডের তালিকা করা হয়।

কর্মশালায় সিটিএফকে বাংলাদেশের প্রোগ্রামস ম্যানেজার জনাব আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, আগে অতিথি আপ্যায়নের অংশ হিসেবে ডালায় সাজিয়ে জর্দা দিয়ে পান, হুকা, এবং বিড়ি-সিগারেটের মতো তামাকজাত দ্রব্য পরিবেশন করা হতো। তবে এখনও বিভিন্ন অফিস এবং রেস্টুরেন্টে স্মোকিং জোন বিদ্যমান, এবং এই স্থানগুলো থেকে নির্গত ধোঁয়া অধূমপায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে চলেছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে এই নির্ধারিত ধূমপান স্থানগুলো বিলুপ্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে তামাকের প্রচারণা করে। এমনকি গণমাধ্যমকে ব্যবহার করেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই প্রচারণা চালায় তারা। এ সময় তিনি চেইন স্মোকারদের ধূমপানের অভ্যাস কমানো, ধূমপানে আগ্রহ সৃষ্টির যেকোনো প্ররোচনা বন্ধ করা এবং নারী, শিশু ও অন্যান্য অধূমপায়ীদের তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষার্থে সব পর্যায় থেকে কাজ করা আহ্বান জানান।

ডর্‌পের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প উপদেষ্টা জনাব মো. আজহার আলী তালুকদার বলেন, তামাকের ব্যবহার হঠাৎ করে বন্ধ করা সম্ভব নয়। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আমরা অনেক আলোচনা করেছি আমরা। কারণে তৃণমূল পর্যায় থেকে তামাকের ব্যবহার রয়েছে। হঠাৎ করে বন্ধ করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে আমাদের তামাকের ব্যবহারের বিরুদ্ধে আমাদের একটা মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

ডর্‌পের উপ-নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তামাকের ব্যবহার রোধের বিষয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। আমাদের কথা দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌছাতে হবে। এতে করে আমরা তামাকের ব্যবহারের বিষয়ে শক্তিশালী আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখতে পারবো।

সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রুবিনা ইসলাম প্রশিক্ষণপ্রার্থী তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, গ্যাটস ২০১৭ রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ মানুষ তামাক ব্যবহার করে, যা উদ্বেগজনক। এই সংখ্যাটি দেশের জনস্বাস্থ্য সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোরভাবে কার্যকর না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

উল্লেখ্য, ডর্‌প বিগত ১৯৮৭ সাল থেকে দেশব্যাপী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সাথে জড়িত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রবর্তনকারী সংস্থা হিসেবে সমধিক পরিচিত। এখন পর্যন্ত ডর্‌প সারাদেশে ৫ টি বিভাগে ৩০ টি জেলায় ৭৪ টি উপজেলায় বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডর্‌প বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও তামাক কর বৃদ্ধি বিষয়ে কাজ করছে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর