কুবির শীর্ষ তিন পদে আসার দৌড়ে এগিয়ে যারা

আপডেট: September 21, 2024 |
inbound5456951715157009821
print news

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ তিনটি পদই শূন্য দীর্ঘদিন ধরে।

আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই পদগুলোতে নিয়োগ দেয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

তবে এই তিনটি পদের মধ্যে উপাচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হায়দার আলী, উপ-উপাচার্য পদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমানের নাম শোনা যাচ্ছে।

তারা তিনজনই জামায়াতপন্থী বলে নিশ্চিত করেছেন একাধিক সূত্র। অথচ শিক্ষার্থীরা দাবি করেছিল, নির্দলীয় শিক্ষকরাই যেন পদগুলোতে আসে।

এই বিষয়ে গণিত বিভাগের ১৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রনি আহমেদ বলেন, ‘স্বৈরাচারের সময়ে দলীয় শিক্ষকদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।

তারা এসেই সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতো। এতে মত প্রকাশের কোন স্বাধীনতা পাওয়া যেত না, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি বলতে পারতো না।

এখন আবার যদি অন্য দলের শিক্ষকদের ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে একই ঘটনা ঘটবে বলে মনে করি। আমরা চাই নির্দলীয় শিক্ষকরা ভিসি হিসেবে আসুক।’

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ফাহিম আবরার বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষার্থীবান্ধব, অরাজনৈতিক ভিসি আমাদের প্রত্যাশা।

শিক্ষার্থীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ, এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের আস্থা দিয়ে কুবি’কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এমন একজনকে আমরা চাই।

যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া অযোগ্য কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে ভিসি হবে এমন কালচার আমরা চাইনা।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথমে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রোকন ছিলেন। পরবর্তীতে ইনসাফ পার্টিতে যোগ দেন।

ক্ষমতা পরিবর্তনের পর আবারও জামায়েত ইসলামীতে যোগ দেন বলে জানা গেছে। এছাড়া অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সাদা দল থেকে নির্বাচন করে আসছেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপির কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওনাকে জামায়াত ঘেঁষা বিএনপিপন্থী হিসেবেই চিনি। তিনি দায়িত্বে আসলে শিবিরের দৌরাত্মে ক্যাম্পাস অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে তিনি বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর সাথে জড়িত বলে জানিয়েছে স্থানীয় লোকজন।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমি এসব বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করবো না। প্রজ্ঞাপন জারি হোক। প্রজ্ঞাপন জারি হলে সবাই জানবে।’

এছাড়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিপন্থী সাদা দল থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছে।

তবে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন সরকার বলেন,
‘ অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন ইউট্যাব’র সাথে সম্পৃক্ত নয়। তাদের সেখানে সদস্য পদ নেই। তারা বিএনপিপন্থী শিক্ষক নন।’

এছাড়া মাসুদা কামালের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ‘পরীক্ষা না দিয়ে ১২ তম হওয়ার’ ঘটনা ঘটেছিল।

সার্বিক বিষয়ে অধ্যাপক ড. মাসুদা কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এরকম অনেকেই বলে। প্রজ্ঞাপন হোক, তারপরে বলা যাবে। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয় মাথায় নেই না। আমি যা, আমি তাই।’

অন্যদিকে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমানকে কোষাধ্যক্ষ পদে তার নাম শোনা যাচ্ছে বলে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘না, আমি এমন কোনো সংবাদ পাইনি।’

এছাড়া তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিককে উল্টো প্রশ্ন করেন তথ্য প্রাপ্তির বিষয়ে। এরপর তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা দল করি৷

এর বাইরে তো কিছু নেই। যদি স্পেসিফিক ডকুমেন্টস থাকে, তবে তা দেখালেই এ বিষয়ে কথা বলবো।’

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর