জাতীয় ঐক্য এবং নির্বাচন দুটোই জরুরী: আব্দুস সালাম

আপডেট: January 7, 2025 |
inbound7220064238701587618
print news

শাহজাহান আলী,বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ যারা নির্বাচন পেছাতে চান তারা শেখ হাসিনার ফিরেজাতীয় ঐক্য এবং নির্বাচন দুটোই জরুরী আসার পথ প্রশস্হ করতে চান কিনা এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএমপি চেয়য়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম। জাতীয় ঐক্য এবং নির্বাচন দুটোই জরুরী।

০৬ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুরে বগুড়া জেলা বিএনপির এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, এখনো আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নির্বাচন দীর্ঘয়িত করা যায় কি’না তার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ অনেকে ভয় পায়।নির্বাচন তাড়াতাড়ি দিলেই বুঝি বিএনপি ক্ষমতায় আসবে।আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ৩ মাস পরে দেন,৬ মাস পরে দেন আর ৯ মাস পরেই দেন।

সতের বছর ধরে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করছি।বিএনপিকে জনগণের কাছ কেউ হঠাতে পরেনি।

কাজেই নির্বাচন যখনই আসবে বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে।কেউ রোধ করতে পারবে না। ষড়যন্ত্র করে আর লাভ নেই। যারা নির্বাচন পেছাতে চান তারা শেখ হাসিনার ফিরে আসার পথ প্রশস্হ করতে চান।

আব্দুস সালাম আরও বলেন, যারা বিএনপিকে ভয় পায় তারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বিএনপিকে ভয় পায় যারা এই দেশটাকে আধিবাদী শক্তির কাছে আবার ফিরায়ে দিতে চায়।

অনেকে মনে করে বিএনপির বিরুদ্ধে বলে খুব বুঝি লাভ করছেন।তাদের মনে রাখা দরকার ৭৫-এর পরে এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয় নি। আওয়ামীলীগকে তারা ক্ষমতায় আনে নি।

বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল এবং ওই সমস্ত ষড়যন্ত্রের মধ্যে কিছু বিরোধী দলেও জড়িত ছিল। এখনও আমরা গণতন্ত্র ফিরে পাইনি।

এখনও আধিপত্যবাদী শক্তির প্রধান( শেখ হাসিনা) ওই ভারতে বসে বার বার হুমকি দিচ্ছে।

বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে শহরের নওয়াববাড়ি সড়কে টিএমএসএস মহিলা মার্কেটের একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তৃতা করেন,দলটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত।

অন্যান্যদের বক্তৃতা করেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম, আলী আজগর তালুকদার হেনা, বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন।কর্মীসভা সঞ্চালনা করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুমবী সালাম।

কর্মী সভায় দেলের ২৪টি সাংগঠনিক ইউনিটের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনা হবে। কর্মী সভায় আব্দুস সালাম বলেন,বিএনপি জাতীয় ঐক্যের বিশ্বাসী।

তিনি বলেন,আওয়ামীলীগ এই দেশটাকে শ্মশান বানিয়ে ফেলেছে।ঐক্য ছাড়া এই দেশকে কোনভাবেই গড়ে তোলা যাবে না। সে কারণে আমরা ঐক্যের কথা বলেছি।

কিন্তু অনেকে মনে করেন যে,বিএনপি দুর্বল বলেই ঐক্যের কথা বলছে।না বিএনপি দুর্বল নয়। যদি ঐক্য ফাটল ধরানো হয়ে তাহলে এই আধিপত্যবাদী শক্তির পক্ষে যারা আছেন তারা লাভবান হবে।

দেশ লাভবান হবে না,ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে আব্দুস সালাম বলেন,একাত্তরের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীরা পালিয়েছিল।স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার কেউ ছিল না।

তখন এই জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব হয়েছিল। তিনি ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।যুদ্ধের পর আবার ব্যারাকে ফিরে গিয়েছিলেন।

কিন্তু দেশের প্রয়োজনে, যখন দেশ চলছিল না,সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্যু পাল্টা ক্যু হচ্ছিল। পুলিশের কোন অবস্থাই ছিল না। কোন শিক্ষাঙ্গণে পড়াশোনা ছিল না,কোন ব্যবসা- বাণিজ্য ছিল না সব জায়গায় দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, রিলিফ লুট,কম্বল চুরি এবং মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছিল।

ঠিক সেই সময় আবার সিপাহী জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান জোর করে ক্ষমতায় আসেন নাই,ক্যু করে আসেন নাই মার্শাল ল’ দেয়েও আসেন নাই।

বিএনপি নামক রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন,জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার আগে সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল।

আওয়ামী লীগও নিষিদ্ধ ছিল। পত্র- পত্রিকা বন্ধ ছিল।সেগুলো ভিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।তিনি তো আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছেন।

কিন্তু তার পরেও তিনি জানতেন আওয়ামী লীগ যতদিন থাকবে ততদিন ঐ আধিপত্যবাদী শক্তির পক্ষে তারা সব সময় কাজ করে যাবে।তাই তার বিপরীতে একটি রাজনৈতিক দল দরকার।

তাই তিনি বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশকে রক্ষা করার জন্য। যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন যে স্বাধীনতা রক্ষা করেছিলেন সেটিকে ধরে রাখতেই বিএনপি গঠন করেছিলেন।

তার পর থেকে যখনই বাংলাদেশে দুর্যোগ এসেছে, গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন হয়েছে তখনই বিএনি বার বার দাঁড়িয়েছে জনগণের পাশে।

আব্দুস সলাম আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। একটা হলো আধিপত্যবাদী শক্তির পক্ষে। যার পক্ষে আওয়ামীলীগসহ তার মিত্ররা।

আর একটি হলো জাতীয়তাবাদী শক্তি যার সঙ্গে বিএনপি পক্ষে যারা আছে। এর মাঝামাঝি কিছু নাই।এর মাঝামাঝি যদি কিছু করতে চান তাহলে আধিপত্যবাদী শক্তিকেই লাভবান করা হবে।

একবার চিন্তা করে দেখেন সেদিকে যাবেন কি’না? নাকি জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে থাকবেন। পরিস্কার কথা হলো-দেশকে যদি বাঁচাতে হয়, শিল্প কলকারখানাকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে বিএনপি ছাড়া কোন বিকল্প নাই।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া কোন বিকল্প নাই। আর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জাতীয় ঐক্য বিশ্বাস করেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর