গাজীপুরে নিজের পছন্দের বিয়ে করে বাড়ি ছাড়া কিশোরী


মাছুদ পারভেজ, গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরে মেয়ের অমতে অভিভাবকরা অন্যত্র বিয়ে দিলে স্বামীকে ত্যাগ করে প্রেমিককে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে স্কুল পড়ুয়া মেয়ে সোমাইয়া আক্তার (১৮)।
সোমাইয়া গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানাধীন খুন্দিয়া এলাকার শুক্কুর আলীর মেয়ে।
শনিবার দুপুরে সোমাইয়া গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে জানান, গত বছর স্থানীয় সুকুন্দি এলাকার মুক্তিযোদ্ধ হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল।
বাবা—মা তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভোড়া এলাকার বাসিন্দা ইয়াজুদ্দিনের ছেলে রাজীব হাসান রানার সঙ্গে সোমাইয়াকে গত বছরের ৬ নভেম্বর বিয়ে দেয়।
এতে তার এস এস সি পরীক্ষা আর দেয়া সম্ভব হয়নি। বিয়ে দেয়ার পরে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হওয়ায় সুমাইয়া একই বছরের ৮ ডিসেম্বর স্বামীকে ডিফোর্স দেন এবং ৯ ডিসেম্বর তার প্রেমিক স্থানীয় মোঃ মোস্তফাকে গাজীপুর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন।
মোঃ মোস্তফা, গাজীপুর মহানগরের সদর থানাধীন হাতিয়াব এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।
কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে মেনে না নিয়ে সোমাইয়ার বাবা পুলিশের কাছে সুমাইয়াকে অপহরণের অভিযোগ করেন মোস্তফার বিরুদ্ধে।
পারিবারিকভাবে সোমাইয়াকে তার স্বজনরা ও পুলিশের সহায়তায় একধিকবার তার বাবার বাড়িতে নিয়ে গেলেও সোমাইয়া আবার মোস্তফার কাছে ফিরে যান।
এমতাবস্থায় সোমাইয়ার বাবা—মা, সোমাইয়ার দ্বিতীয় স্বামী মোস্তফা ও তার পরিবারের লোকজনকে মামলার ভয়—ভীতিসহ নানা হুমকি দিচ্ছেন। হুমকির মুখে মোস্তফাকে নিয়ে সোমাইয়া বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
গাজীপুর নোটারী পাবলিকের সময় হলফ নামায় সোমাইয়া তার বয়স ১৮ বছর উল্লেখ করে বলেন, আমরা হলফকারীরা প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নিজেদের ভালোমন্দ বুঝতে সক্ষম।
দীর্ঘদিন ধরে সোমাইয়া—মোস্তফার মধ্যে প্রেম ভালোবাসা চলছে। আমরা একে অপরকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
তাই আমরা সজ্ঞানে ও সুস্থ্য মস্তিকে এক লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে গাজীপুর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেছি। ইতোপূর্বে যথাযথভাবে আইনী প্রক্রিয়ার মাধম্যে সোমাইয়া প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মোস্তফার বাবা আবুল কাশেম জানান, সোমাইয়াকে আমরা জোর করে রাখছিনা। সে নিজে থেকেই স্ব—ইচ্ছায়— স্বজ্ঞানে মোস্তফার সঙ্গে বসবাস করছে।
তারপরও সোমাইয়া যদি মোস্তফাকে ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যায় তাহলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। কিন্তু এতো কিছুর পরেও সোমাইয়ার তার বাপের বাড়ি ফিরে যেতে রাজি হচ্ছে না।
এমতাবস্থায় তারা বাড়িতে না থেকে বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে ড়োচ্ছে। এদিকে বাবা ও স্বজনরা সোমাইয়াকে ফিরিয়ে দিতে আমাদের ভয়—ভীতি ও নানা হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু সোমাইয়া তার বাবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছে না।
সোমাইয়া বাপের বাড়ি চলে গেলেও আমাদের কোন আপত্তি নেই। এমতাবস্থায় আমাদের দোষ কোথায়? কিংবা করণীয় বা কি?।
সংবাদ সম্মেলন শেষে, ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার গাজীপুর পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।