নিভে গেল আরও এক প্রাণ, শূন্য হলো গোটা পরিবার

আপডেট: April 5, 2025 |
inbound2893379945861494920
print news

নিভে গেল আরও এক প্রাণ, শূন্য হলো গোটা পরিবার
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্যের বনরেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে জাঙ্গালিয়া মাজারটেক এলাকায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শোক না কাটতেই এলো আরও একটি বিষাদের খবর।

মৃত্যুর সঙ্গে দু‘দিন পাঞ্জা লড়ে নিভে গেল তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা (১৮) নামে আরও একটি তাজা প্রাণ।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) বিছানায় নিভে যায় তার জীবন প্রদীপ।

এই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শুধু একটি সম্ভাবনাময় তরুণ প্রাণের অবসান ঘটলো না, আক্ষরিক অর্থে শূন্য হয়ে গেল গোটা একটি পরিবার।

বুধবারের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছিল প্রেমার বাবা রফিকুল ইসলাম শামীম (৪৬), মা লুৎফুন নাহার সুমি (৩৫), বোন আনিসা (১৬) ও লিয়ানার (০৮) জীবন। প্রেমা ছিলেন সেই পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য। কিন্তু, সব লড়াই ব্যর্থ করে দিয়ে তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক তানিফা ইয়াসমিনও (১৯)। তানিফা ইয়াসমিন ছিলেন তাসনিয়া ইসলাম প্রেমার ফুফাতো বোন।

তারা সে দিন মাইক্রোবাসে করে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন সমুদ্রের গর্জন দেখতে। তার আগেই ঘাতক রিলাক্স পরিবহনের বাসের আঘাতে একে একে থেমে যায় ১০টি প্রাণ।

তাদের মিছিলে যোগ হলো প্রেমাও। তাতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১১ জনে।

একই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শিশু আরাধ্য বিশ্বাসকে (৮) উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে আজ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

চমেক হাসপাতাল থেকে আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাধ্যকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন স্বজনেরা। আরাধ্য চমেক হাসপাতালের শিশু আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল।

এখন চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুর্জয় কুমার মণ্ডল (১৮)। তিনি শিশু আরাধ্যের স্বজন।

গত বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাস-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় সে দিনই ১০ জন নিহত হন।

এছাড়া নিহত হন আরাধ্যর বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা মণ্ডল। নিহত অপর তিনজন হলেন ইউছুফ আলী (৫৭), আশীষ মণ্ডল (৫০) ও মোক্তার আহমেদ (৫২)। ইউছুফ গাড়িচালক ছিলেন বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনজন। তাদের মধ্যে আজ তাসনিয়ার মৃত্যু হলো। আহত অপর দু’জনের মধ্যে দুর্জয় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর আরাধ্যকে চমেক হাসপাতাল থেকে আজ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলো।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর থেকেই তাসনিয়া সংজ্ঞাহীন ছিলেন। প্রথম থেকেই তাকে চমেকের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছিল।

চমেকের আইসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আজ দুপুর ১২টায় তাসনিয়াকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শুরু থেকেই তার অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। সময়ের সঙ্গে অবস্থার অবনতি হয়।’

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তাসলিম উদ্দীন বলেন, আহত আরাধ্যকে আজ ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে আরও উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হবে। আর দুর্জয় এখানে চিকিৎসাধীন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর