গাজীপুরে মোগড়খাল খনন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পরিদর্শন করলেন জিসিসি প্রশাসক


মাসুদ পারভেজ, গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মোগরখাল খনন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
তিনি নগরীর ভোগড়া বাইপাস মোড়ে খালটির শুরু থেকেই বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মোগড়খাল।
দীর্ঘ দিন নানা অব্যবস্থাপনার কারণে খালটি বিভিন্ন স্থানে সরু ও ভরাট হয়ে গিয়েছিল। পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল।
খালটি বিভিন্ন স্থানে অবৈধ দখলও হয়ে গেছে। এটি মাপঝোপ করলে জানা যাবে। খালটি দিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হওয়াই এখন প্রধান কাজ।
বৃষ্টি হলে গাজীপুর চৌরাস্তা ও ভোগড়া মোড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে যানচলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ যানজট নিরসন করতে হিমসিম খেতে হয়।
বৃষ্টি হওয়ার পরে সড়কে যে পানি জমে থাকে তা দ্রুত নিষ্কাশন করতে হবে। পানি নামানোর পর আমরা খালের সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করবো।
এতে জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ এবং বিআরটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, খালটির শুরুতেই অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এখানে অনেকগুলো কারখানা হয়েছে। যারা নিজেরাই যার যার মতো করে সীমানা প্রাচীর তৈরী করেছেন, কালভার্ট নির্মাণ করেছেন।
সীমানা নির্ধারণের পর এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পরিদর্শনকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল—৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, হারুন অর রশীদ, বর্জ্যব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সোহেল রানা, নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, আশরাফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গাজীপুর মহানগরবাসীর জলাবদ্ধতা ও দূর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে মহানগরীর দীর্ঘতম ও প্রাচীন মোগরখাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন।
সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালটির সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও পরিস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
গত ২৩ মে সকাল থেকে খালটির উৎস মূখ গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়।
জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে মোগরখালটি পূর্ব চান্দনা, খাইলকুর, হায়দারাবাদ প্রভৃতি এলাকা অতিক্রম করে হায়দারাবাদ খালে মিলিত হয়।
পরে এটি নিমতলী খাল হয়ে টঙ্গী নদীতে পতিত হয়। স্থানীয়রা জানায়, মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার জলবদ্ধতা নিরসনে এই খালটি রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
এটি সবচেয়ে বেশী অবৈধ দখল ও দূষণের শিকার। বিভিন্ন কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, অবৈধ দখল এ খালটি তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছিল।
এ কারণে স্থানীয় এবং ঢাকার বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, খালপাড়ের মানুষ এই খালটির সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খননের দাবি জানিয়ে আসছিল।
এমনি দাবির প্রেক্ষিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালটির সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ খনন ও ময়লা অপসারণ এর কাজ শুরু করেছে।
খালের অপসারিত মাটি ও অন্যান্য বর্জ্য খালের পাশে না ফেলে ট্রাক দিয়ে সরাসরি ডাম্পিং পয়েন্টে নিয়ে ফেলা হচ্ছে।