মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে আহতদের সহায়তায় জবি বাঁধনের ব্যতিক্রমী মানবিক অবদান


তানিয়া শবনম, জবি প্রতিনিধি: রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর আহতদের সহায়তায় অসামান্য মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বাঁধন ইউনিট।
দুর্ঘটনার পরপরই সংগঠনটি দ্রুত বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি রক্ত ও ত্বক (স্কিন) দানের মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে বাঁধন ইউনিট সরবরাহ করেছে ১০০ ব্যাগ রক্ত এবং ২ জন স্বেচ্ছাসেবকের স্কিন ডোনেশন, যা স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের ইতিহাসে এক বিরল ও ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
গুরুতরভাবে দগ্ধ শিশুদের জীবনরক্ষায় স্কিন দান ছিল অপরিহার্য এবং তা তাদের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
এর পাশাপাশি সংগঠনটি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৮০০ জনেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবককে জরুরি রক্তদানের জন্য প্রস্তুত রেখেছে, যাতে প্রয়োজনে মুহূর্তের মধ্যে সাড়া দেওয়া যায়।
একইসঙ্গে ৭৫০ জনের বেশি মানুষের বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় সম্পন্ন করেছে বাঁধন ইউনিট, যা ভবিষ্যতের যেকোনো সংকটে তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানে সহায়ক হবে।
জবি সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব বলেন, “দুর্ঘটনার খবর শুনে মন ভীষণভাবে ভারাক্রান্ত হয়েছিল।
যখন জানতে পারলাম আমাদের জবি বাঁধন ইউনিট আহত শিশুদের জন্য রক্ত ও স্কিন ডোনেশন কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তখন গভীর গর্ব অনুভব করেছি। আমি নিজেও রক্ত দিয়েছি—এটি আমার জীবনের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা।”
বাঁধন জবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মো. তাসনিমুল হাসান নিশাদ বলেন, “অগ্নিদগ্ধ ছোট্ট শিশুদের যন্ত্রণাময় অবস্থা যে কাউকে গভীরভাবে বিচলিত করবে।
দুর্ঘটনার দিন থেকেই আমরা স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলাম এবং প্রতিদিন ব্লাড ব্যাংকের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছি।
যখনই রক্তের প্রয়োজন হয়েছে, তখনই আমরা ডোনারসহ হাজির হয়েছি। আহতদের পাশে থাকার জন্য আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়েছি।”
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিকটবর্তী এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।
দেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটে, যাদের অধিকাংশই ছিলেন কোমলমতি শিক্ষার্থী।