নির্ধারিত সময়ে বেতন হয়নি ৩৭০ কারখানায়, সড়কে শ্রমিক বিক্ষোভ

করোনা সংকটে সামাজিক দূরত্বে নিশ্চিতে সরকার তৎপর থাকালেও রাজধানী একাধিক সড়কে পোশাক শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে। সরকারি প্রণোদনা ঘোষণার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থার হুঁমকির পরেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩৭০টি কারখানার মালিক পোশাকশ্রমিকদের বেতন এখনও পরিশোধ করেননি বলে জানিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করে বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে পোশাকশ্রমিকরা।

দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অধিকাংশ পোশাক কারখানাও বন্ধ রয়েছে। ছুটির পাশাপাশি লকডাউন পরিস্থিতিতে ১৬ ব্যাংকসহ সব জায়গায় কর্মকাণ্ডে শিথিলতা থাকায় ১৬ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কারখানা মালিকরা।

পোশাকশ্রমিকদের বেতন পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে গত ১৩ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছিলেন, ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন প্রদানে ব্যর্থ হলে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে কাজ বন্ধ থাকা ও বিদেশি ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ বাতিলের কারণে অর্থনৈতিক ধাক্কা যাতে পোশাক কারখানা মালিকরা সামলে নিতে পারেন সে লক্ষ্যে তাদের জন্য স্বল্প সুদে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।

এই প্রণোদনা ঘোষণার পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই সব কারখানা মালিক শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি বলে শনিবার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপদির্শক শিবনাথ রায় স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানা যায়।

এতে বলা হয়, ঢাকা জেলার ১২২টি, গাজীপুর জেলার ১২০টি, নারায়ণঞ্জ জেলার ৩০টি, চট্টগ্রাম জেলার ৫৮টি, পাবনা জেলার তিনটি, নরসিংদী জেলার ছয়টি, ময়মনসিংহ জেলার ১১টি, মুন্সিগঞ্জ জেলার একটি, দিনাজপুর জেলার তিনটি, রংপুর জেলার দুটি, কুমিল্লা জেলার পাঁচটি, ফরিদপুর জেলার চারটি, রাজশাহী জেলার দুটি, খুলনা জেলার তিনটি কারখানার মালিক নির্ধারিত ১৬ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন।

শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২৩টি উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বেতন না পেয়ে অচলাবস্থার মধ্যে পোশাক শ্রমিকরা খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বেতনের দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের এই জমায়েত ও বিক্ষোভে সরকারের করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে গৃহীত পদক্ষেপও বিঘ্নিত হচ্ছে। শ্রমিকদের মধ্যেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

বৈশাখী নিউজবিসি