মায়ের কবরে শায়িত হলেন সাহারা খাতুন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।আজ শনিবার বেলা ১১ টায় বনানী কবরস্থান জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষ তাকে মায়ের কবরে দাফন করা হয়।
বনানী কবরস্থান মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সেখানে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও অন্যান্যরা সাহারা খাতুনকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান। পরে তাকে মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
জানাজা শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সাহারা খাতুনের মরদেহে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পক্ষেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এরপরে আওয়ামী লীগ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়ে দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০ টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটেরর তেজতুরিপাড়ারার বায়তুশ শরফ জামে মসজিদে মরহুমার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সাহারা খাতুন বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে সাহারা খাতুনের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি উন্নত চিকিৎসার জন্য ৬ জুলাই তাকে এয়ার এম্বুলেন্স করে ব্যাংকক নেয়া হয়। সেখানে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ওইদিনই তাকে ভর্তি করা হয়।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১ টা ৩০ মিনিটে ইউএস-বাংলার একটি বিশেষ বিমানে সাহারা খাতুনের মরদেহ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে দেশের পৌঁছায়। সেখান থেকে সাহারা খাতুনের মরদেহ রাতে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হয়।
সাহারা খাতুন ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ তিনি ঢাকার কুর্মিটোলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবদুল আজিজ ও মাতার নাম টুরজান নেসা। শিক্ষাজীবনে তিনি বিএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং রাজনীতির পাশাপাশি আইন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। আইন পেশায় আসার পর সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০০৮-এর নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রিসভা গঠনের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১২ সালে মন্ত্রণালয়ের রদবদল ঘটলে তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সাহারা খাতুন বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা