ভাইরাসের সঙ্গে বাঁচতে শেখার সময় এসেছে?

আপডেট: September 22, 2020 |

করোনা মহামারীর শুরুতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ ও লকডাউন আরোপ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য বিধিনিষেধগুলো শিথিল করে সব ধরনের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

যদিও এমন পদক্ষেপে আবার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে কি আমাদের ভাইরাসের সঙ্গে বাঁচতে শেখা দরকার?

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এভিডেন্স বেজড মেডিসিনের প্রধান অধ্যাপক কার্ল হেনেঘান বলেছেন, বর্তমানে চরম বিশৃঙ্খলপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। সংক্রমণের মাত্রা কম থাকলেও নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ে একজন আক্রান্ত পাওয়া গেলে সবাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

এসবের পরিবর্তে আমাদের সবকিছু চালিয়ে যাওয়া এবং ঝুঁকিগুলো হ্রাস করার চেষ্টা করা উচিত। আমাদের চিন্তাভাবনা ধীরস্থির করা দরকার। অধ্যাপক হেনেঘান ও অন্যান্য বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের যুক্তি, সংক্রমণের সংখ্যার চেয়ে বরং রোগের দিকে বেশি মনোযোগ দেয়া দরকার। যদিও কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে, তবুও সেটা বসন্তের তুলনায় অনেক কম এবং বৃদ্ধির হারও অনেক বেশি ধীর।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা পেজেল বলেছিলেন, ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার অনুমতি দেয়া দায়িত্বজ্ঞানহীন হবে। কারণ আমরা এক বছরের কম বয়সীদের ওপর ভাইরাসটির প্রভাব ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নই। যদি সংক্রমণের হার কম বয়সী ও স্বাস্থ্যবানদের মধ্যে বেড়ে যায় তবে এটা ঝুঁকিপূর্ণদের মধ্যে ছড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা কঠিন হবে।

আমরা যদি ভাইরাসের সঙ্গে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নিই, তাহলে আরেকটি বিতর্কিত বিষয় সামনে এসে যায়-হার্ড ইমিউনিটি। এখন সবচেয়ে বড় আশা হলো আমরা দ্রুতই ভ্যাকসিন পাব। তবে যদি না পাই? কিংবা এটা যদি সব বয়সীদের সমানভাবে সুরক্ষা দিতে না পারে? এক্ষেত্রে বিকল্প উপায় হলো মানুষদের আক্রান্ত হতে দেয়া।

তবে এ প্রক্রিয়ায় হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করতে কয়েক বছর এমনকি কয়েক দশক পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুনেত্রা গুপ্ত বিশ্বাস করেন, পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা যে পরিমাণ প্রাকৃতিক ইমিউনিটি পাচ্ছি বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি থাকতে পারে। আবার তরুণ ও সুস্থদের আক্রান্ত হতে দেয়া আগামী বছরগুলোয় উপকারী হবে। আমরা এভাবেই ভাইরাসের সঙ্গে বেঁচেছি, তবে এটার ক্ষেত্রে আলাদা কেন? আমরা যদি বিধিনিষেধ ও লকডাউন চালিয়ে যেতে থাকি, তবে তরুণরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এভাবে আসলে চলতে পারে না, এটা অন্যায় হবে। বিবিসি

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর