মার্কিন নির্বাচনের ফল আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান হতে পারে

মার্কিনিদের শিরদাঁড়া বেয়ে নামছে শিহরণ। অনাকাঙ্খিত এক সহিংসতার আশঙ্কা তাদেরকে ঘিরে ধরেছে। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ পর্যন্ত গড়াতে পারে আদালত পর্যন্ত। তেমনটা অনেকবার বলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে আজকের নির্বাচনের ফল কি আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান হবে?

এমন অনেক প্রশ্ন যখন ভোটারদের মধ্যে তখন দুই পক্ষই আইনি বাহিনী গড়ে তুলছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য। সেই লড়াই আদালতে গড়ালে সেখানে বাঘা বাঘা আইনজীবীদের নিজেদের পক্ষে নিয়ে প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে উভয় পক্ষ। আগের অনেক নির্বাচনে এমন উদ্ভট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি কখনো।

বিশেষ করে করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে এবারের নির্বাচনটা ব্যতিক্রমী। বলা হচ্ছে, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পরবর্তী বিরোধ তুঙ্গে উঠতে পারে। ফলে এতে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিভক্তি দীর্ঘায়িত হতে পারে। এসব কথা বলেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে আগাম ভোট নেয়া হয়েছে। মেইলে ভোট দিয়েছেন বিপুল সংখ্যাক ভোটার। সেই ভোট নিয়ে জালিয়াতি হতে পারে বলে অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

জনমত জরিপে পিছিয়ে থাকা ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচনের দিনের পরেও যদি রাজ্যগুলোতে ভোট গণনা বাকি থাকে তাহলে তিনি আইনজীবীদের আশ্রয় নেবেন। অর্থাৎ তিনি আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।

তাই সোমবার রাতে তিনি পেনসিলভ্যানিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, পেনসিলভ্যানিয়াতে মেইলে যেসব ভোট নেয়া হয়েছে তা নির্বাচনের তিনদিন পরে কেন্দ্রে পৌঁছাবে। যদি নির্বাচনের তিন দিন পরে ওইসব ভোট গণনা করা হয় তাহলে তাতে ব্যাপক জালিয়াতি হতে পারে।

তবে কিভাবে জালিয়াতি হবে সে সম্পর্কে তিনি কিছুই বলেননি। ওদিকে পেনসিলভ্যানিয়াতে ভোট গণনায় বর্ধিত সময় অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। কোর্টের সেই সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে তার এমন আচরণকে অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

মিয়ামিতে তিনি প্রচারণায় সোমবার বলেছেন, যদি আপনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাহলে প্রতিটি ভোট গণনা হোক এটা আপনাকে চাইতে হবে।

সোমবার আরেকটি ব্যাটলগ্রাউন্ড বলে পরিচিত রাজ্য উইসকনসিনে প্রচারণা চালান ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, খুব বাজে সব ঘটনা ঘটছে। এসব বাজে ঘটনা অন্যরকম ঘটনার দিকে নিয়ে যাবে। ট্রাম্পের দাবি আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তাতে পরিস্থিতি রাস্তায় সহিংসতার দিকে নিয়ে যাবে।

তার এসব বার্তাকে ‘ফ্লাগড’ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তবে সঙ্গে তারা একটি ঘোষণা জুড়ে দিয়েছে। তাতে ট্রাম্পের এসব মন্তব্যকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করা হয়েছে। ওদিকে এর আগেই টুইটার জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতার আগে বিজয়ের যেকোনো টুইটে তারা সতর্কতা জুড়ে দেবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ভোট গণনায় কয়েকদিন এমনকি কয়েক সপ্তাহ লাগার ঘটনা কোনো অস্বাভাকি ঘটনা নয়। তার ওপর এবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে মেইলে ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে রেকর্ড পরিমাণ।

এসব ভোট গণনা করতে অনেকটা সময় প্রয়োজন। এমন অবস্থার প্রেক্ষাপটে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী জো বাইডেনের প্রচারণা বিষয়ক ম্যানেজার জেনিফার ও’ম্যালে ডিলন সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনের রাতে কোনোভাবেই ডনাল্ড ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করার কোনো পথ নেই।

এমনকি দ্রুততার সঙ্গে নিজেকে বিজয়ী মনে করতে পারেন জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, আমি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করি। বিপুল পরিমাণ মানুষ ভোট দিতে চান।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ডেমোক্রেট ঘরানার হাউজটন এলাকায় আগাম দেয়া এক লাখ ২৭ হাজার ভোট বাতিল করার জন্য রিপাবলিকানরা আবেদন করেছিলেন। কিন্তু টেক্সাসে ফেডারেল যেসব বিচারক আছেন, তারা সেই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা