শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত বৃদ্ধির ঘোষণা

আপডেট: January 15, 2021 |

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আরেক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত করা হয়েছে। শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ রায় সাক্ষরিত পৃথক পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগের ঘোষণা অনুসারে আজ ১৬ জানুয়ারী ছুটি শেষ হওয়ার কথা ছিলো।

শিক্ষার দুই মন্ত্রনালয়ই জানিয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান ছুটি আবার বাড়ানো হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ছুটির সময়ে নিজেদের এবং অন্যদের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তবে কওমি মাদ্রাসা এ ছুটির আওতামুক্ত থাকবে। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি কয়েক ধাপে বাড়িয়ে সর্বশেষ আজ ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছিল।

ছুটির সময়ে ভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা ও অনুশাসনগুলো শিক্ষার্থীদের মেনে চলতে হবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাসস্থানে অবস্থানের বিষয়টি অভিভাবকরা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের বলা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। শিক্ষার্থীরা যাতে বাসস্থানে অবস্থান করে নিজ নিজ পাঠ্যবই অধ্যয়ন করে সে বিষয়টি অভিভাবকদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।

এদিকে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে ইতিবাচক পরিবর্তন সাপেক্ষে আগামী মাসের কোন একটা সময়ে সীতিত পরিসরে কিছু প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। ফেব্রুয়ারী থেকে সিমিত পরিসরে কিছু প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা থেকেই ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এখনো হয়নি। তবে ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত অবস্থা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এর আগে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দিপু মনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসির পরীক্ষার্থীদের জন্য ফেব্রুয়ারীতে সিমিত সংখ্যক স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তাভাবনা আছে। এসএসসি ও এইচএসসি স্তরের শিক্ষার্থীদের সিলেবাস পুনর্বিন্যস্ত করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত স্কুল-কলেজে নিয়ে ক্লাস করানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেছিলেন, গত ১৬ মার্চ থেকে প্রত্যক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি। সিলেবাস কাস্টমাইজ করার কার্যক্রম চলছে। পরের স্তরে যেতে যেগুলো প্রয়োজন, সেগুলো মাথায় রেখে সিলেবাসকে কাঁটছাট করে ছোট করা হবে, সেটি আমরা জানিয়ে দেব। পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে ২০২১ সালের জুন নাগদ এই পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করব। স্কুলগুলো খুলে দেয়ার চেষ্টা করব। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি যেন নতুন সিলেবাসে ক্লাস করে পরীক্ষা দিতে পারে।

এদিকে সরকারি স্কুলে (সংযুক্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি ২০ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এছাড়া ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ভর্তি শেষ করতে হবে। অধিদফতর থেকে সারাদেশের সকল সরকারি স্কুলে এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ভর্তির সময় কোটা ও অন্যান্য সকল কাগজ যাচাই করে এ সময়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। লটারির ফল অনুযায়ী স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মূল জন্মনিবন্ধন সনদ, মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা সনদ, সংরক্ষিত কোটা থাকলে সে সংক্রান্ত কাগজ যাচাই করে ২০ জানুয়ারির মধ্যে সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

১১ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে লটারির মাধ্যমে সারাদেশের ৩৯০টি স্কুলের ৭৭ হাজার ১৪৪জন শিক্ষার্থীকে বাচাই করা হয়। সেই সঙ্গে সমপরিমাণ অপেক্ষমাণ তালিকাও প্রকাশ করা হয়। তবে ভর্তির জন্য নির্বাচিত তালিকায় বিভিন্ন স্কুলে বেশ কিছু ভুল ধরা পড়েছে। বালককে বালিকা স্কুলে ভর্তির সুপারিশ করা হয়েছে আবার বালিকাকে বালক স্কুলে ভর্তির সুপারিশও করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাচমেন্ট এরিয়াসহ আরও কিছু ভুল ধরা পড়ছে। এসব ভুল সংশোধনের জন্য একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক।

তিনি বলেছেন, যে ভুলগুলো এখন পর্যন্ত ধরা পড়েছে, তা আবেদনকারীই করেছে। তারপরও এগুলো সংশোধনের সুযোগ দেয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থাকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ ধরনের ভুল হলে তা সংশোধন করা হবে।

বৈশাখী নিউজবিসি

 

 

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর