ভ্যাকসিন না নিলেই ভয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আপডেট: January 30, 2021 |

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেছেন, ভ্যাকসিন নিলে কোনও ভয় নেই। বরং ভ্যাকসিন না নিলেই ভয়। ভ্যাকসিন এখন একটি বড় অস্ত্র এই করোনার জন্য।

তিনি বলেন, যে কোনও কাজ করতে গেলে কিছু সমালোচক থাকে। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা নিয়ে বিরূপ প্রচার-প্রচারণা আছে। প্রতিটি ভ্যাকসিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। একটু জ্বর হতে পারে, শরীর গরম বা মাথা ব্যথা হতে পারে। টিকা নেওয়ার যায়গাটা একটু ফুলে যেতে পারে। প্রতিটি ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তাই বলে কি ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি? সুস্থ জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককে ভ্যাকসিন নিতে হবে।

আজ শনিবার মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে বিশেষ অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সরকারের যে গাইডলাইন (নীতিমালা) সে অনুযায়ী সারাদেশে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কনোনাভাইরাস যেভাবে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে, ভ্যাকসিনও সফলতার সঙ্গে দিতে পারবো।

অনেক দেশের আগে সরকার ভ্যাকসিন আনতে পেরেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ বিষয়ে প্রশংসা পাবে, পাচ্ছেও অলরেডি। অনেক রাষ্ট্র এখনও ভ্যাকসিন পায় নাই, আগামী দুই-তিন মাসেও পাবে কিনা সন্দেহ আছে। তার উদাহরণ- থাইল্যান্ড এখনও ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করতে পারে নাই, মালয়েশিয়া পারে নাই, সিঙ্গাপুর পারে নাই, শ্রীলঙ্কা পারে নাই। বড় বড় রাষ্ট্রগুলো পারে নাই। বিশ্বের ২৩ নম্বর দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে। ঘরে বসে শুধু সমালোচনা করা যায়, বাস্তবতা অনেক কঠিন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন এমনি এমনি আসে নাই। গত ছয় মাস যাবত এই ভ্যাকসিন আনার জন্য এর পেছনে লেগে থাকতে হয়েছে। যারা যারা ভ্যাকসিন তৈরি করছে সবাইকে আমরা পত্র পাঠিয়েছি। সবার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেছি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অন্যতম সেরা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক। পৃথিবীর ৬০ ভাগ ভ্যাকসিন এ ইনস্টিটিউটে তৈরি হয়। সেখান থেকে আমরা এ ভ্যাকসিনটি আনার ব্যবস্থা করেছি। অনেক দেনদরবার হয়েছে এ নিয়ে। ভ্যাকসিন আসার আগ মুহূর্তে সব দেশের চাপ পড়েছে। আমরা আগে আগে বুকিং দিয়েছি, আগে আগে টাকা পাঠিয়েছি, রিকোয়েস্ট করেছি। অন্যরা এখন চাপ সৃষ্টি করছে। আমরা তিন কোটি ভ্যাকসিনের টাকা অলরেডি দিয়ে দিয়েছি। ২০ লাখ ভ্যাকসিন ভারত সরকার বাংলাদেশের মানুষকে উপহার হিসেবে দিয়েছে। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আছে। ডব্লিউএইচওতে আমাদের সাড়ে ছয় কোটি ভ্যাকসিনের অর্ডার দেওয়া আছে। যখন পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকবে তখন তারা আমাদের সরবরাহ করবে।

তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার একটি পদ্ধতি অনসুরণ করা হবে। ফ্রন্ট লাইনারদের আগে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তারপরে পর্যায়ক্রমে যারা বয়সে সিনিয়র তাদের দেওয়া হবে। কোভিড আমরা সফলতার সঙ্গে মোকবিলা করেছি, ভ্যাকসিন দেওয়াতেও আমার সফলতার সঙ্গে দিতে পারবো।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যত জনকে ভ্যাকসিন দিয়েছি সবাই ভালো আছেন। যারা যারা এ ভ্যাকসিন দিচ্ছে যেমন ইউরোপে, ভারতে সব জায়গায় আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি। তারা সবাই ভালো আছে।

অবহিতকরণ সভায় জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমি আখন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, ডায়াবেটিস সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সাধারণ সম্পাদক অতীন্দ্র চক্রবর্তী বিপ্লব প্রমুখ।

পরে মন্ত্রী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে রাখা মানিকগঞ্জের জন্য আনা ৪৮ হাজার ভ্যাকসিন পরিদর্শন করেন।

বৈশাখী নিউজএপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর