যুক্তরাজ্যের বাজেট ঘোষণায় পুঁজিবাজার চাঙ্গা
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হওয়ার পর ব্রেক্সিট-পরবর্তী প্রথমবারের মতো জাতীয় বাজেট ঘোষণা করল যুক্তরাজ্যে। গতকাল বুধবার দেশটির অর্থমন্ত্রী ঋষী সনাক ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পার্লামেন্টে বাজেট পেশ করেন। এ বাজেট ঘোষণার পর লন্ডনে ব্রিটিশ শেয়ার মার্কেটের উত্থান দেখা গেছে। করোনা-পরবর্তী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা পুনরায় বড় অঙ্কের বিনিয়োগ শুরু করেছেন। খবর: রয়টার্স, বিবিসি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের অর্থবছর ৬ এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিল। সে হিসাবে নতুন অর্থবছর শুরু হবে আগামী ৬ এপ্রিল।
বাজেট বক্তৃায় অর্থমন্ত্রী ঋষি সনাক যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারসহ নতুন কর্মসংস্থান তৈরির ঘোষণা দেন। ফলে বাজেট ঘোষণার পর পরই গতকাল লন্ডনের স্টক মার্কেটে এফটিএসই ১০০ সূচকে এক দশমিক তিন শতাংশ বেড়তে দেখা যায়। যেখানে ব্যাংক খাত বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রধানত এইচএসবিসি হোল্ডিংস পিএসলসি, বারক্লেস এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড পিলসি দুই শতাংশ থেকে দুই দশমিক ছয় শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার বেড়েছে।
এছাড়া লন্ডনের মাইনিং (খনি) স্টকে গ্রেলনকোর পিএলসি, অ্যাংলো আমেরিকান অ্যান্ড বিএইচপির শেয়ারেও ব্যাপক উত্থান হয়েছে। যেখানে বড় অবদান রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানি বিপি এবং রয়াল ডাচ শেল।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ স্টেফ্যান কপম্যান বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, বাজেটে করপোরেট কর হ্রাস এবং কিছু বিষয়ে আগামী অর্থবছরের নির্দিষ্ট ভারসাম্য রাখায় অর্থনীতির (পুঁজিবাজার) জন্য শুভক্ষণ। ব্রিটিশ সরকার চাইছে, আগামী বাজেটে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি টাকা থাকুক, যা একটা ভালো দিক বলে মনে করেন তিনি’।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী ঋষি সনাক অঙ্গীকার করেছেন যে, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস ‘সরকার ব্যাপক কর্মসংস্থান’ পুনরুদ্ধার করার যে পরিকল্পনা করেছে; তা অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে করোনাকালীন যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের জন্য বাজেটে বড় অঙ্কের প্রণোদনা ঘোষণা করা ছিল বাজেটে একটি চ্যালেঞ্জ।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত বছর ব্রিটেনের অর্থনীতি বিশেষত পুঁজিবাজার এফটিএসই ১০০ সূচকে যে ধস নেমেছে, বাজেটে তার অন্তত ৩৫ শতাংশ পুনরুদ্ধার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া দ্রুত প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, দ্রুত টিকাদান কর্মসূচির কারণে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারমুখী হচ্ছেন।
বাজেটে অর্থমন্ত্রী ঋষি সনাক করোনার কারণে যে সব নাগরিক কর্মহীন হয়ে পড়ছেন, তাদের জন্য প্রণোদনা আরও পাঁচ মাস অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রায় ৮০ শতাংশ লোক মহামারির জন্য চাকরি করতে পারেনাই। তিনি আরও বলেন, এ প্রণোদনার আওতায় ব্রিটেনের প্রায় আরও ছয় লাখ স্বনির্ভর মানুষ আসছেন।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা