সিরাম ও ভারত বায়োটেককে শতভাগ অগ্রিম অর্থ দিল ভারত সরকার

আপডেট: April 20, 2021 |

ভারতে টিকা উৎপাদনকারী দুই প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত বায়োটেককে শতভাগ অর্থ অগ্রিম পরিশোধ করে রেখেছে দেশটির সরকার।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই পর্যন্ত টিকার অগ্রিম মূল্য হিসেবে সিরামকে তিন হাজার কোটি রুপি ও ভারত বায়োটেককে এক হাজার কোটি রুপি পরিশোধ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

করোনাভাইরাসে ভারতে ২৪ ঘণ্টায় আবারও রেকর্ড মৃত্যুর মধ্যেই এলো এ খবর। দেশটিতে সোমবার এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭৫৭ জনের, মহামারিকালে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ফলে এক বছরে ভারতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে।

দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ১ কোটি ৫৩ লাখের বেশি মানুষ। টানা ষষ্ঠ দিনের মতো দুই লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি। গত এক সপ্তাহে এ সংখ্যা ১৬ লাখের বেশি। করোনাভাইরাসে সংক্রমণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানে আছে ভারত। প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরই অবস্থান দেশটির।

এমন পরিস্থিতিতে মহামারি নিয়ন্ত্রণে টিকা কার্যক্রমের গতি বাড়াতে তৎপর হয়েছে ভারত সরকার। গত সপ্তাহে ভারত বায়োটেকের বেঙ্গালুরু কারখানার জন্য ৬৫ কোটি রুপির তহবিলে অনুমোদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। কোভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়াতে নেয়া হয় এ পদক্ষেপ।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদন করছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মাসিউটিক্যালসের গবেষণালব্ধ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা কোভিশিল্ড। অন্যদিকে ভারতীয় গবেষকদের উদ্ভাবিত কোভ্যাকসিন উৎপাদন করছে ভারত বায়োটেক।

টিকা উৎপাদন অব্যাহত রাখতে এবং ধাপে ধাপে উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দিতে প্রতিষ্ঠান দুটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে দেশটির সরকার। অর্থায়নের প্রাথমিক লক্ষ্য, টিকা প্রস্তুতে কাঁচামাল আমদানি, কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ও টিকা উৎপাদন ও বণ্টন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে করোনার টিকার মজুত শেষ হয়ে আসছে বলে উদ্বেগের মধ্যেই এসব তথ্য প্রকাশ করল ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়।

সোমবার সকালেই পাঞ্জাব সরকার কেন্দ্রকে হুঁশিয়ার করে জানায়, রাজ্যটিতে আর মাত্র তিন দিন টিকা দেয়ার মতো ডোজ মজুত আছে। শুক্রবার অন্ধ্র প্রদেশ জানায়, রাজ্যটিতে টিকার মজুত সম্পূর্ণ শেষ।
টিকার সরবরাহ পর্যাপ্ত নয় বলে চলতি মাসের শুরুতেই মুম্বাই-পুনেসহ রাজ্যের শতাধিক টিকাকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয় মহারাষ্ট্রে।

চলতি সপ্তাহেই ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, টিকা উৎপাদনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশটি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে টিকা আমদানির কথাও ভাবছে। যদিও এর আগ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল, করোনাভাইরাসের টিকার ঘাটতি নেই ভারতে।

এদিকে আগামী ১ মে থেকে ভারতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের প্রত্যেকের জন্য টিকা কার্যক্রম শুরু করছে ভারত। বর্তমানে টিকা নেয়ার জন্য দেশটিতে ন্যূনতম বয়স ৪৫ বছর। গত ১৬ জানুয়ারি ভারতে টিকা কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে এক বা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন সাড়ে ১২ কোটি মানুষ।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর