ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা নিবেদন

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ছাত্রলীগ।

সোমবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয় সহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে ৭ জুন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ঐতিহাসিক ছয় দফা ছিল মহান স্বাধীনতার একটি রূপরেখা। জাতির পিতা বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার রূপরেখা তৈরি করতেই ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অবিচারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে স্বায়ত্তশাসনের ঐতিহাসিক ছয় দফা দিয়ে একটি অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন এবং ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয় এবং বঙ্গবন্ধুর ডাকে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।’

সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ছয় দফা ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ছয় দফাকে কেন্দ্র গড়ে উঠা আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছিল। ৭ জুন হয়ে ওঠে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের এক উজ্জ্বল টার্নিং পয়েন্ট। এটি ছিল বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক। তাই এর পিছনে ব্যাপক জনসমর্থন সৃষ্টি হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছয় দফা আন্দোলনে বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার চেতনা আরও সুদৃঢ় হয়। দীর্ঘদিনের শোষণ, নির্যাতন আর পরাধীনতার ঘোর অন্ধকারে আলোর মশাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঐতিহাসিক ছয় দফা। সেই আলোর পথ বেয়েই স্বাধীনতার দিকে ধাবিত হয় বাঙালি জাতি এবং এর মাধ্যমেই বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়।’

প্রসঙ্গত, ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এ দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহীদ হন। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপসহীন সংগ্রামের ধারায় উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।

পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক ৬ দফাভিত্তিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়। এ দাবির সপক্ষে বাঙালি জাতির সর্বাত্মক রায় ঘোষিত হয় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বাঙালিরা বিজয়ী করে।

অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দলকে জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাকিস্তানের শাসকরা বিজয়ী দলকে সরকার গঠন করতে না দিলে আবারো বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা