স্ট্রিমিংয়ের জন্য ডিজনির বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাক উইডো’ তারকার মামলা

আপডেট: July 31, 2021 |

ওয়াল্ট ডিজনির নামে মামলা করেছেন ‘ব্ল্যাক উইডো’ মার্ভেল তারকা, স্কারলেট জোহানসন।

স্কারলেট অভিনীত সুপারহিরো চলচ্চিত্র ‘ব্ল্যাক উইডো’কে ডিজনি তাদের স্ট্রিমিং সার্ভিসে মুক্তি দেয়ার মাধ্যমে চুক্তি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ এনেছেন এই অভিনেত্রী। বৃহস্পতিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে ডিজনির নামে উচ্চ আদালতে এই মামলা করেন তিনি।

চলচ্চিত্রটি একই সাথে থিয়েটারে এবং তাদের অনলাইন সার্ভিসে মুক্তি দেয়া হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, চলচ্চিত্রটির বক্স অফিস সাফল্যের উপর ভিত্তি করে জোহানসন তার বেতন নিবেন বলে চুক্তি হয়েছিল।

মামলায় বলা হয়, “চলচ্চিত্রের সাফল্য ও নিজের অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে জোহানসন মার্ভেলের সাথে চুক্তি করেছিলেন যে এটি শুধুমাত্র ‘থিয়েট্রিক্যাল রিলিজ’ হবে বা সিনেমা হলে মুক্তি পাবে।

কারণ জোহানসন, হলিউড, ডিজনি ও মার্ভেল সবাই জানেন যে থিয়েট্রিক্যাল রিলিজ মানে হলো থিয়েটারগুলোতেই কেবল চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেয়া। ডিজনি এই প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে খুব ভালো করেই জানতো; তবুও তারা তা ভঙ্গ করেছে এবং থিয়েটারের একই দিনে ডিজনি প্লাস স্ট্রিমিংয়ে ছবিটি মুক্তি দিয়েছে।”

কিন্তু জোহানসনের এই অভিযোগকে অস্বীকার করে ডিজনি জানিয়েছে, এ ধরনের মামলার কোনো ভিত্তি নেই এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিষয়টি অত্যন্ত দু;খজনক।

‘ব্ল্যাক উইডো’ চলচ্চিত্রটি ‘প্রিমিয়ার অ্যাক্সেস’ সহ ডিজনি প্লাসে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে জোহানসনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল বলেও দাবি করেছে ডিজনি। তারা আরও জানায়, জোহানসন এযাবৎ যে ২০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছেন, ডিজনি স্ট্রিমিং এ মুক্তির ফলে তিনি আরও বাড়তি আয় করতে পারবেন।

কিন্তু জোহানসনের অ্যাটর্নি জন বার্লিনস্কি’র দাবি, ডিজনি নিজেদের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়াতে এবং কোম্পানির স্টকের মূল্য বর্ধিত করতে এটি স্ট্রিমিংয়ে মুক্তি দিয়েছে।

করোনা মহামারির ফলে হলিউড পাড়ার থিয়েটারগুলো যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গিয়ে মুনাফা অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছে, তখন স্ট্রিমিং সেবাই হয়ে উঠেছে হলিউডের কেন্দ্রবিন্দু।

ডিজনি প্লাস ও থিয়েটারে একই সময়ে ‘ব্ল্যাক উইডো’ মুক্তির ঘোষণা গত মার্চেই দিয়েছিল ডিজনি। ২০২০ সালের মে মাসে মুক্তির কথা থাকলেও, মহামারির কারণে একাধিকবার ছবিটি মুক্তির সময় পেছানো হয়।

অন্যান্য স্টুডিও একই দিনে স্ট্রিমিং এ ছবি মুক্তি দিলেও, ‘ব্ল্যাক উইডো’ নিয়ে বিতর্কের কারণ আছে। ২০০৮ সালের পর থেকে গ্লোবাল বক্স অফিসে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে হলিউডের সবচেয়ে বড় ব্লকবাস্টার ব্র্যান্ড মার্ভেল।

এক রাশিয়ান ঘাতকের অ্যাভেঞ্জার বনে যাওয়ার গল্প নিয়ে তৈরি ‘ব্ল্যাক উইডো’ মুক্তি পেয়েছে গত ৯ জুলাই। মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডীয় বক্স অফিসে ৮০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে ছবিটি।

এছাড়াও, ডিজনি প্লাসে এখন পর্যন্ত ৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অবশ্য এরপর থেকে ছবিটির আয় কিছুটা কমে এসেছে। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে এর আয় ৩১৮ মিলিয়ন ডলারে অবস্থান করছে।

স্কারলেট জোহানসন এ পর্যন্ত মোট ৯টি মার্ভেল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

ওয়ার্নার ব্রাদার্সসহ আরও কিছু চলচ্চিত্র স্টুডিও ও তাদের চলচ্চিত্রের তারকা ও অন্যান্য কলাকুশলীদের সঙ্গে পারিশ্রমিক নিয়ে মধ্যস্ততা করেছে। কারণ সেসব চলচ্চিত্র শুধু থিয়েটারে মুক্তির কথা থাকলেও, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির জন্য স্ট্রিমিং সার্ভিসেও মুক্তি দেয়া হয়েছে।

তবে মামলায় জোহানসন দাবি করেছেন, তার প্রতিনিধি এই ইস্যু সমাধানের জন্য আগ্রহ দেখালেও, তাদেরকে এড়িয়ে গেছে ডিজনি।

ডোয়াইন জনসন ও এমিলি ব্লান্ট অভিনীত অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার চলচ্চিত্র ‘জাঙ্গল ক্রুইজ’ও শুক্রবার একই দিনে থিয়েটার ও স্ট্রিমিংয়ে মুক্তি দিয়েছে ডিজনি। সিএনএন

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর