আফগানিস্তানে লড়াই এখন ক্ষুধার সঙ্গে

আপডেট: September 21, 2021 |
print news

এখনও ছন্দে ফেরেনি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের জনজীবন। তালেবান নিয়ন্ত্রণের কারণে  জীবনযাত্রায় কী ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে তাও বুঝে উঠতে পারছেন না কাবুলের বাসিন্দারা। তবে এটুকু স্পষ্ট, শহরের নিম্নবিত্তদের জন্য ক্ষুধাই এখন বড় সমস্যা।

গেল সপ্তাহ থেকে কাবুলের রাস্তায় জনসাধারণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে যেই কথাটি, তা হল –খাবারের দাম বেশি, সন্তানদের তিন বেলা খাওয়া জোটাতে হিমশিম দরিদ্র্য পরিবারের বাবা-মা।

এখন প্রায় প্রতিদিনই কাবুলের রাস্তায় শত শত নির্মাণ শ্রমিককে দেখা যায়, যারা কাজের সন্ধানে দাঁড়িয়ে থাকেন দিনভর। কিন্তু কোনও লাভ নেই, কারণ শহরের বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাঙ্ক গুলোও বন্ধ। বিদেশি দাতা সংস্থাও বন্ধ করেছে তাদের আর্থিক সহায়তা।

কখনও দুএকটা কাজের জন্য এক দল শ্রমিককে ভাড়া করা হলে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন অন্য শ্রমিকরা, কারণ তাদের পেটেও ক্ষুধা।

Hunger Fight under Taliban 2109210539

এমনই এক শ্রমিক হায়াত খান। তিনি বলছেন, ধনী ব্যাক্তিরা শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবে, দরিদ্রদের নিয়ে নয়। হতাশার সঙ্গে তিনি বলেন, “ আমি রুটিও কিনতে পারছি না। বিশ্বাস করুন আমি একটি ডলারও খুঁজে পাচ্ছি না। ধনি ব্যক্তিরা পশ্চিমা সাহায্যের ডলার এখন খরচ করছে না,  সঞ্চয়ে রেখেছে।“

হায়াত খানের চেয়ে কিছুটা সৌভাগ্যবান মোহাম্মদ আনোয়ার। কারণ তিনি এখনও একটি অফিসে কাজ করতে পারছেন। তিনি আমেরিকানদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে বলেন, “তারা আফগান সরকারের যে টাকা নিয়ে গেছে তা যেন আল্লাহর নামে ফেরত দেয় এবং তা যেন আফগানিস্তান পুন:নির্মাণে ব্যবহার হয়।“

এদিকে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রি করে খাবার কিনছেন কাবুলের মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো। তবে সেখানেও বিপত্তি, পুরোনো জিনিসের ক্রেতাদের হাতেও পয়সা নেই।

দেশটিতে দরিদ্যসীমার নিচে থাকা হাজারও নাগরিক এতদিন জীবন ধারণ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দাতা সংস্থার অর্থায়নে।  এসব অর্থায়নের প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এখনও আফগানিস্তানের দেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে জমা আছে। তবে তা তালেবানের হাতে যাতে না যায়, সেই ব্যবস্থাই করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেকারণে এই অর্থ দেশটির দরিদ্য জনগোষ্ঠীর কাজেও লাগছে না।

তালেবান নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আফগান নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা , নারী শিক্ষা এবং নারী অধিকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু এর চেয়েও বেশি জরুরী, ক্ষুধার সমস্যা সমাধান  করা, বলছেন সেখানকার খেটে খাওয়া মানুষ।

এ অবস্থায় যেসব দেশ তালেবানের বিরুদ্ধে কিন্তু আফগানদের সাহায্য করতে চায় তারাই এখন দ্বিধায়। এমন দেশ গুলো বলছে, সাহায্য পেতে হলে তালেবান কে একটি কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।

তা না হলে দেশটি আবারও ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে এবং জিহাদি ও চরমপন্থীদের ঘাঁটি হয়ে উঠতে পারে।   সূত্র : বিবিসি

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর