দুই বছর পর স্বরূপে দেশের শিক্ষাঙ্গন

দীর্ঘ দুই বছর পর স্বরূপে ফিরছে দেশের শিক্ষাঙ্গন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম আংশিক চলছিল।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক সময়ের মতোই শতভাগ ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা যেমন ক্লাসে যাচ্ছে, তেমনই প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা (২০২০ সালের ১৭ মার্চের আগের সময়ের মতো) পুরা ক্লাস করছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব ধরনের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও তা ছিল আংশিক। দ্বিতীয় দফায় করোনার ডামাডোলে ২১ জানুয়ারি ফের বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এক মাস পর ২২ ফেব্রুয়ারি শুধু মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও মাদরাসা এবং কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ক্লাস চালু করা হয়। এরপর ২ মার্চ সীমিত আকারে প্রাথমিক স্তরের পাঠদান শুরু হয়।
করোনাকালের এই দীর্ঘ বন্ধে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া অনেকটাই অনিয়মিত হয়ে পড়ে। কেবল বার্ষিক পরীক্ষাই নয়, এসএসসি-এইচএসসির মতো পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা ‘অটোপাশ’ বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের পরীক্ষায় পদোন্নতি পেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের এই ফাঁকে হয়েছে অনেক শিখন ঘাটতি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল। শিক্ষাজীবন রক্ষায় ইউনিসেফ, ইউনেস্কোর মতো সংস্থা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছিল।
এদিকে,পুরোদমে ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কোথাও কোথাও ক্যাম্পাসের ভেতরেও পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয়েছে। আজ (১৫ মার্চ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুরো ঘুরে দেখা গেছে, ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করানো হচ্ছে। করোনার অতিমারি পূর্বের সময়ের মতোই শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ ইতোমধ্যে ‘প্যান্ডেমিকের’ পরিবর্তে ‘এন্ডেমিকে’ (সাধারণ জ্বর-সর্দি) পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘নিউ-নরমাল’ অবস্থায় ফেরার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী ছিল।
এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম খান জানান, প্রাথমিক স্তরে ক্লাস চলছে পুরোদমে। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয়দিনই স্কুলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস উন্মুক্ত করতে সময় নেওয়া হয়েছিল। এখন তাদের জন্যও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বার খুলে দেওয়া হয়েছে।