ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইউরোপ
উত্তর দিকে আগুনঝরা দাবদাহ প্রবাহিত হওয়ার মধ্যেই মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) আরও বেশি উত্তপ্ত তাপমাত্রার মুখোমুখি পশ্চিম ইউরোপ। ফ্রান্স ও ব্রিটেনে ভয়াবহ দাবদাহের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। স্পেনের উত্তরাঞ্চলে সোমবার ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
পর্তুগাল, স্পেন, গ্রিস ও ফ্রান্সে প্রাণঘাতী দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এসব দেশের হাজার হাজার বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়েছে। এদিকে সবচেয়ে উষ্ণতম দিনের প্রত্যাশায় আছে যুক্তরাজ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রান্সের বিভিন্ন অঞ্চলে উষ্ণতার মহাবিপর্যয় চলছে। ইউরোপীয় দেশটিতে নরকের আগুনের মতো দাবদাহ বয়ে চলছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এমন খবর দিয়েছে।
স্পেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জ্যামোরা অঞ্চলে দাবানলে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আগুন রেললাইনের কাছাকাছি আসায় ট্রেন চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে। পর্তুগালের উত্তরাঞ্চলে আগুন থেকে বাঁচতে গিয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যু হয়েছে।
ফ্রান্সের জাতীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নঁতে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা সেখানে এ-যাবতকালের সবচেয়ে বেশি।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দাবানলে ৩০ হাজারের বেশি বাসিন্দা ঘরবাড়ি থেকে চলে গেছেন। বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। দাবানলের শঙ্কায় হাজারখানেক প্রাণীর একটি চিড়িয়াখানাকেও খালি করে দেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সের জনপ্রিয় পর্যটন অঞ্চল গিরন্দিতে ভয়াবহ গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের মারাত্মক ধকল সইতে হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ফ্রান্সের সতেরো হাজার বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
গিরন্দির আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট জু-লুক গ্লিয়েজ বলেন, দাবানলকে আমি সহজ ভাষায় প্রকাশ করতে গেলে বলতে হবে ‘দানবীয়’। দানবীয় অক্টোপাসের মতো আমাদের ওপর চেপে বসেছে আগুন। দাবানল বাড়ছে, সামনের দিনগুলোতে তা আরও প্রখর রূপ নেবে। বাতাস যেভাবে বইছে, আর্দ্রতার কারণে আগুন দ্রুতই কমে আসার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, দাবানল এখন এমনই দানবীয় হয়ে উঠেছে যে তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।