ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের দুই লিফট নষ্ট, ভোগান্তিতে রোগীসহ স্বজনরা

আপডেট: January 16, 2023 |
jhenidah photo 1 scaled
print news

টিপু সুলতান,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: সেলিনা বেগমের শ্বশুর অসুস্থ। হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলায় তার অবস্থান। প্রতিনিয়ত নিচে ওঠানামা করতে হয়। কিন্তু রোববার থেকে হাসপাতালের বহুতল ভবনরে দুইটি লিফট এক সঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তিনি। শুধু সেলিনা বেগন নয়, তার মতো শতাধীক রোগী ও রোগীর স্বজনরা বিপাকে পড়েছেন। সেই সাথে চিকিৎসক ও নার্সসহ হাসপাতালের স্টাফরাও।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১২টার পর থেকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের লিফট বন্ধ হয়ে যায়। লিফট বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগী ও তার স্বজনদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ভর করে। আতংক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এদিকে হৃদরোগ ও দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ জরুরী প্রয়োজনে ওঠানামা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক হার্টের রোগী প্রয়োজনে তিনতলার উপরে উঠতে পারছেন না। আবার চিকিৎসকরাও ৬ তলা ও ৮ তলায় যেতে পারছেন না।

আসাদুজ্জামান নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ঝিনাইদহ আড়াই’শ বেড জেনারেল হাসপালের লিফট ছিল আতংক। আগে যখন তখন লিফট বন্ধ হয়ে রোগী ও তার স্বজনরা বিপদের সম্মুখিন হলেও কোন প্রতিকার ছিল না। কারণ এ দুটি লিফট চালান হাসপাতালেরই তিনজন সিকিউরিটি গার্ড। এ বিষয়ে তারা দক্ষ না হলেও তাদের হাতেই সোপর্দ করা হয়েছে আটতলা ভাবনের দুইটি লিফট। ফলে প্রতিনিয়ত লিফট আটকে রোগীদের বিড়ম্বনায় ফেলে দিত। এবার নষ্ট হয়ে ভোগান্তির চরম শিখরে পড়লো রোগীর পাশাপাশি ও তার স্বজনরা।

লিফট নষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়নে সৈয়দ ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, বিষয়টি রোববার জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। মিটিংয়ে উপস্থিত ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফারুক হোসেনকে অবহিত করে দ্রæত লিফটি মেরামতের জন্য বলা হয়েছে।

হাসপাতালের তত্বাবধায়ক জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালটি বহুতল বিশিষ্ট হওয়ায় লিফট খুবই জরুরী। প্রতিদিন রোগীসহ প্রায় ৮/৯’শ দর্শনার্থী লিফট ব্যবহার করেন। তাছাড়া তিন তলা ছাড়া লিফট ব্যাতিত উপরে যাওয়া কষ্টকর।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ফারুক হোসেন ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম জানান, লিফট কেনার জন্য গনপুর্ত বিভাগের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাইখ দুইবার ইটালি যান। তিনিই দেখে শুনে এই লিফট কিনে আনেন। তাই লিফট নিয়ে প্রশ্ন উঠলে গনপূর্ত বিভাগ তার সমাধান করবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৭ সালে টি.ই অ্যান্ড ইউসিসি জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ভবনটি হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু রহস্য জনক কারনে তার সমাধান করতে পারেনি। এক পর্যায়ে নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার বদলি হয়ে যান।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর