তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু


বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে পেপারবুক থেকে পাঠ করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন এবং অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
এর আগে ১৫ জুলাই আপিল বিভাগ এই মামলায় সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের শুনানির জন্য ১৭ জুলাই দিন ধার্য করেন।
২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ ওই রায়ে বলেন, “এই মামলার বিচার ছিল অবৈধ, এটি আইনে টেকে না। যে চার্জশিটের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত বিচার করেছিলেন, তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।”
এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। সর্বোচ্চ আদালত গত ১ জুন রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিলের অনুমতি দেয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শতাধিক নেতা-কর্মী, যাঁদের অনেকে এখনও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে জীবনযাপন করছেন, কেউ কেউ চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এই মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু এবং সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কায়কোবাদসহ অনেকেই।
মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের প্রক্রিয়ায় প্রায় ছয় বছর পর উচ্চ আদালতে শুরু হলো রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি।