নওগাঁর মান্দায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে শিক্ষক দম্পতি লাঞ্ছিত


আকতারুজ্জামান নাইম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁর মান্দায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এক শিক্ষক দম্পতি লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার বিকেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ও অফিস স্টাফদের হাতে তারা লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খন্ডকালীন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসক সহ ষ্টাফদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা দম্পতি হলেন, উপজেলার ফতেপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক তাজিবুল হক ও প্রসাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজনীন নাহার।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তারা হলেন, মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কর্মকর্তা রিফাত বিনতে জান্নাত (লিয়া), প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের চালক ইমন, নৈশপ্রহরী সোহেল রানা, স্বেচ্ছাসেবক নাজমুল হক,বাপ্পি নাগ এবং বাবলু।
জানা গেছে,চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাত গতকাল শুক্রবার বিকেলের সিফটে জরুরী বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এ সময় অনেক ভীড় ছিলো সেখানে। শিক্ষক দম্পতিকে চিকিৎসা প্রদান শেষে অন্য রোগীকে ডাকলে, শিক্ষক দম্পতি আবার পেশার মাপতে চান।
সে সময় মেডিকেলের ইমারজেন্সিতে অনেক ভীড় থাকায় তাকে বাহিরে একটু অপেক্ষা করতে বলেন ডাক্তার। কিছু সময় পর প্রেশার মেপে দেওয়ার কথা জানান তিনি।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সেই শিক্ষক তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোন বের করে ওই নারী চিকিৎসকের ভিডিও ধারণ করতে গেলে তিনি বাধা প্রদান করেন। এর পরে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সেখানে কিছু গণমাধ্যম কর্মী, শিক্ষক, দম্পত্তি,ডাক্তার ও উপজেলার সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার রায় সহ অনেককে দেখা গেছে।
সেখানে ঘটনাটি নিয়ে বৈঠক ও জেরা করেন তারা। ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নারী চিকিৎসকের পক্ষে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য আসা শুরু করে।
সেখানে বেশীর ভাগ লোক ওয়ার্ড বয়, মেডিকেলের ওয়ার্ডের পরিবেশ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা বিষয়ে নেগেটিভ মন্তব্য করেন।
এ ঘটনার ভিডিও কমেন্টে মোজাম্মেল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন,ঐ শিক্ষক তার ছেড়া। সোনালী ব্যাংকের বুথের সার্ভার আপডেটের সময় বুথের সাটার নামানো ছিলো।
সে সময় তিনি (তাজিবুল) একা সাটার তুলে বুথে প্রবেশ করেন। তখন দারোয়ান প্রশ্ন করলে তার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এবং মোবাইলে ছবি তুলেন।
নারী চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাত বলেন, সেসময় ইমারজেন্সিতে অনেক ভিড় ছিলো। স্বামী-স্ত্রী আমার কাছে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
চিকিৎসা শেষে পেশার মাপতে চাইলে ভীড়ের কারণে তাদেরকে বাহিরে একটু অপেক্ষা করতে বলি। ওই সময় ইমারজেন্সী অনেক রোগীর ভিড় ছিল।
তাছাড়া তারা অতটা অসুস্থ ছিলেন না, বাইরের কিছু রিপোর্ট দেখাতেও এসেছিলেন তারা । তাকে বাহিরে বসতে বলার কারণে তিনি আমার প্রতি ক্ষীপ্ত হয়ে ভিডিও তৈরি করছিলেন।
এসময় তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিদের সাথে গল্প করার মতন কিছু ঘটেনি। তিনি স্থানীয় হিসেবে এটাকে এখন অন্য খাতে প্রবাহিত করতে চাইছেন।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে আপনাদের সব কিছু ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তারা নিউজে যা বক্তব্য দিয়েছে তা সঠিক নয়।আমার কাছে এটাকে আমার বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত মনে হচ্ছে।
শিক্ষক তাজিবুল হক গণমাধ্যমের বিভিন্ন সাক্ষাতকারে বলেন, ‘স্ত্রী নাজনীন নাহার ও আমার চিকিৎসার জন্য শুক্রবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই।
এ সময় জরুরি বিভাগের ভেতরে ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাত গল্পে মগ্ন ছিলেন।