তিন দশকের লুটের বিচার, নতুন সংবিধান চায় নেপালের তরুণরা

আপডেট: September 11, 2025 |
inbound6237909259510016397
print news

নেপালে সহিংস বিক্ষোভে সরকারের পতনের পর জেনারেশন জি’র তরুণরা বিস্তৃত দাবি তুলেছেন। এর মধ্যে সংবিধান নতুন করে পুনর্লিখন, সরাসরি নির্বাহী নেতৃত্ব এবং গত তিন দশকের লুটপাটের তদন্তসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের দাবিও রয়েছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নেপালে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারকে পতন ঘটানো জেনারেশন জি’র তরুণ বিক্ষোভকারীরা রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের এক বিস্তৃত দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবি মধ্যে শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এবং গত তিন দশকে রাজনীতিকদের অবৈধ সম্পদ লুটের তদন্তও রয়েছে।

আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, বিক্ষোভে নিহত প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তাদের পরিবার সম্মান ও সহায়তা পাবে। পাশাপাশি বেকারত্ব মোকাবিলা, অভিবাসন কমানো ও সামাজিক বৈষম্য নিরসনে বিশেষ কর্মসূচির প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়, এটি গোটা প্রজন্ম ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য। শান্তি জরুরি, কিন্তু তা সম্ভব কেবল নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে।”

তারা আশা প্রকাশ করেছেন, রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনী তাদের প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বাস্তবায়ন করবেন।

বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবিগুলো হলো—

• বর্তমান প্রতিনিধি পরিষদ ভেঙে দেওয়া, কারণ এটি জনগণের আস্থা হারিয়েছে। জনগণ, বিশেষজ্ঞ ও তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণে সংবিধানের সংশোধন বা সম্পূর্ণ পুনর্লিখন।

• অন্তর্বর্তীকাল শেষে স্বাধীন, সুষ্ঠু এবং সরাসরি জনঅংশগ্রহণের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন।

• এছাড়া সরাসরি নির্বাচিত নির্বাহী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। গত তিন দশকের লুট হওয়া সম্পদের তদন্ত এবং অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রীয়করণ। এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ— এই পাঁচ খাতে কাঠামোগত সংস্কার।

এর আগে বুধবার ভোর থেকেই সেনাবাহিনী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে মোতায়েন হয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং অস্থিরতা দমনে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর আগের দিন সহিংস বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী ওলি পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।

তবে সরকারের পতনের পরও অস্থিরতা কমেনি। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেনাবাহিনী রাতেই দেশজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং কাঠমান্ডু, ললিতপুর, ভক্তপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিধিনিষেধ আরোপ করে।

সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, কিছু গোষ্ঠী বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে এবং সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে।

এর আগে গত সোমবারের জেনারেশন জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত হওয়ার দায় নিয়ে জবাবদিহির দাবিতে শত শত মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করলে ওলি পদত্যাগ করেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর