৫২ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে : জাতিসংঘ

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় ৫২ লাখ মানুষ। রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে চলমান যুদ্ধে পালানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাসে পালিয়েছে ১১ লাখের বেশি। তাছাড়া শুধু মার্চেই পালিয়েছে ৩৪ লাখ।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষা প্রধান লয়েড অস্টিন। স্থানীয় সময় রোববার মার্কিন এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে সফর করবেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরই সেখানে এটাই তাদের প্রথম সফর। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেন, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে এখনো ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে।

সফরকালে ইউক্রেনের কী ধরনের অস্ত্রের প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে আলোচনা করবেন ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন। জেলেনস্কি নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে সরব ভূমিকা পালন করছে জাতিসংঘ। যুদ্ধ থামাতে দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অ্যান্তনিও গুতেরেস চলতি সপ্তাহে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।

জানা গেছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংঘাতের নেপথ্যে মূল কারণ হিসেবে রয়েছে ন্যাটো। ন্যাটোর আওতায় রয়েছে ৩০টি দেশ। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জার্মানি। আর এই গোষ্ঠীভুক্ত হওয়ার চেষ্টায় রয়েছে ইউক্রেন। এ ঘটনা নিয়েই মূলত দেশ দুটির মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়।

বিভিন্ন ইস্যুতে আগে থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রই রয়েছে ন্যাটোভুক্ত দেশের তালিকায়।

এদিকে, ইউক্রেন চাইছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশগুলোর সঙ্গে তারাও ন্যাটোর আওতায় চলে আসুক। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একই গোষ্ঠীতে প্রতিবেশী ইউক্রেনকে দেখতে নারাজ রাশিয়া। এদিকে ন্যাটো ইউক্রেনের জন্য নিজের দরজা খুলে দিয়েছে। এই ঘটনা মস্কোকে খুব একটা স্বস্তি দেয়নি।

কেন ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রাশিয়া ক্ষুব্ধ? কেন ইউক্রেনের এই পদক্ষেপকে আটকাতে চাইছেন পুতিন? এর নেপথ্যে রয়েছে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।

ন্যাটোভুক্ত যেকোনো দেশে বহিরাগত আক্রমণের ক্ষেত্রে বাকি সদস্য দেশগুলোর সহায়তা পেয়ে যায় ওই সংশ্লিষ্ট দেশ। আর রাশিয়ার প্রতিবেশী ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে প্রবেশ করে, তাহলে তাকে সহায়তা করতে আসবে সদস্য দেশগুলো। আর এতেই ক্ষুব্ধ ছিলো রাশিয়া।

তাছাড়া ২০১৪ সালে রাশিয়া প্রথমবার ইউক্রেনে প্রবেশ করে। তখন প্রেসিডেন্ট পুতিন সমর্থিত বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বেশ বড় একটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এরপর থেকেই তারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে আসছে।

যুদ্ধ বন্ধে একটি আন্তর্জাতিক মিনস্ক শান্তি চুক্তি হয়েছিল, কিন্তু লড়াই তাতে থামেনি। আর এ কারণেই রাশিয়ার নেতা বলছেন, ওই অঞ্চলে তিনি তথাকথিত শান্তিরক্ষী পাঠাচ্ছেন।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি