স্টেশনে ছাত্রলীগ নেতার মানবিক ভালোবাসার বহি:প্রকাশ

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের এই দিনে সব শ্রেনী-পেশার মানুষ মেতে থাকেন উৎসবে। সেই উৎসবে শামিল হতে পারেন না অনেক দুস্থ-অসহায়; বিভিন্নভাবে যারা বাস্তুচ্যুত, রাজধানীতে থাকেন ভাসমান নাগরিক হয়ে।

তাদের দিকে ফিরে তাকানোর সময় হয় না কারো। এরই মধ্যে কেউ কেউ মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেন নি:স্ব এসব মানুষের দিকে। এমন একজন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার হামিদুর রহমান।

রাজধানীর এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে ভাসমান এমন ২’শ মানুষকে ঈদের দিন খাবার খাইয়েছেন তিনি। নি:স্ব এসব মানুষের কাছ থেকে শুনে তাদের পছন্দের খাবার রান্না করেছেন ছাত্রলীগের এই নেতা।

ঈদের দিন এভাবে খোঁজ নেয়ায় আবেগাপ্লুত এসব সুবিধাবঞ্চিত মানুষ। বছরজুড়ে অবহেলার শিকার এসব মানুষকে কেউ খোঁজ রাখে না। ঈদের দিনও ভালো ভালো খাবার তো দুরের কথা, অনেকের চুলা জ্বলে না এই দিনে। হয়তো অভুক্তও থাকেন পরিবারের ছোট্ট শিশুটিও। গায়ে ওঠে না নতুন জামাও। তাদের খোজঁ নিয়ে তাদের পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়ায় খুব খুশি তারা।

এভাবে কেউ তাদের মনে করে খাবার রান্না করেছেন, সেজন্য কৃতজ্ঞতার শেষ নেই ছিন্নমুল মুক্তা বেগমের। ছেলেমেয়ে নিয়ে প্রায়ই অভুক্ত থাকা এই মানুষটিও ঈদের দিন খুশিতে পেটপুরে খেয়েছেন।

“খুশি আছি। কেউ তো খোঁজ নেয় না। ছেলে মেয়ে আজকে পেট ভরে খেয়েছে। আমরা খুব খুশি হইছি”, বলছিলেন তিনি।

হামিদুর রহমান জানান, এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনের এসব ভাসমান মানুষের কাছে আগে জানতে চেয়েছেন তারা কি খাবেন। তারাই মেন্যু ঠিক করে দিয়েছেন কি খাবেন। সেই অনুযায়ী খাবার রান্না করা হয়েছে।

মানবিক এই কাজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হামিদুর রহমান বলেন, ঈদ উপহার হিসেবে তিনি বিভিন্নজনের কাছ থেকে বখশিশ পেয়েছিলেন। সেই টাকায় এই আয়োজন করেছেন।

“আমার মনে হয়েছিল সারা বছর কিংবা রোজার সময় এই ছিন্নমুল মানুষগুলোকে অনেক মানুষই সহযোগিতা করে, কিন্তু ঈদের দিন কেউ খোঁজ রাখে না। এদের অনেকেরই ভাসমান মানুষ। অনেকের বাবা নাই, কারো মা নাই। আবার কারো বাবা মা কেউ নাই, তারা আসলে জানে না যে তারা কোথায় যাবে? কোথায় ঈদ করবে? এই জন্য আমার মনে হলো এই ঈদটা এবার তাদের সাথেই উদযাপন করবো।”

এই আয়োজনে নিজে অনেক পরিতৃপ্তি পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের সাথে এক বেলা খাব, এতে করে তাদের কিছুটা হলেও ভালো লাগবে। আশা করি তাদের ভালো লেগেছে।’