৯২ পর্যবেক্ষকের নজরদারিতে কুমিল্লা সিটি ভোট
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে সাতটি দেশি সংস্থার ৯২ জন পর্যবেক্ষককে ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১৫ জুন) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক আবেদন করেননি। দেশি সাতটি সংগঠনের মোট ৯২ জন পর্যবেক্ষককে ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) ছয় জন, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের ১৩ জন, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার ছয় জন, রিহাফ ফাউন্ডেশনের ২৭ জন, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশনের ২৭ জন, মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (মওসুস) পাঁচ জন ও সমাজ উন্নয়ন প্রয়াসের আট জন পর্যবেক্ষকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে ছয় জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন— বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত আরফানুল হক রিফাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র হিসেবে কামরুল আহসান বাবুল, মো. মনিরুল হক সাক্কু (বিএনপি নেতা ও দুইবারের মেয়র), মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও মাসুদ পারভেজ খান। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর মিলে ১৪০ জন প্রার্থী আছে ভোটের মাঠে। নির্বাচনে ৫ নম্বর ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এ সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি ভোটকক্ষে। প্রতিটি ভোটকক্ষ থাকছে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরার আওতায়।
কুসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী ভোটার এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন দুজন।
ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১৬ হাজার ৪৭৪ জন। আর সবচেয়ে কম ভোটার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে, ৩ হাজার ৮৯৪ জন।
২০১৭ সালের ৩০ মার্চ সর্বশেষ কুসিক নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওই বছর ১৭ মে। ভোটগ্রহণ করার শেষ সময় ছিল চলতি বছরের ১৬ মে। কিন্তু বিগত কমিশন বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসায় আর তফসিল দেয়নি। ফলে অতি অল্প সময়ের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এই সিটি পরিচালনায় দায়িত্ব দিতে হয়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে। নির্বাচনের পর নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করা পর্যন্ত তিনি করপোরেশন পরিচালনা করবেন।
২০১৭ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু দ্বিতীয়বারের মতো এ সিটিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কুসিকের প্রথম নির্বাচনেও ২০১২ সালে তিনি জয়লাভ করেছিলেন। প্রথমবার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় সাক্কু স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। পরের বার বিএনপির টিকিটে ধানের শীষ প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করেন। এবারও বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে এবং আজীবন দল থেকে বহিষ্কার করায় সাক্কু হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
দুটি পৌরসভাকে একীভূত করে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন করে সরকার।