রুশদির ওপর হামলার প্রশংসায় ইরানের পত্রিকা

আপডেট: August 14, 2022 |

বুকারজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলায় ইরানের কট্টরপন্থী কয়েকটি পত্রিকা প্রশংসায় ভাসিয়েছে। শুক্রবারের এ হামলার পর ইরান সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

রয়টার্স ও এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কট্টরপন্থী ইরানি সংবাদপত্র কায়হান লিখেছে, ধর্মত্যাগী ও দুষ্ট সালমান রুশদির ওপর নিউইয়র্কে হামলাকারী ওই সাহসী ও কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তিকে হাজারো ধন্যবাদ।

পত্রিকাটি আরও লিখেছে, যিনি ঈশ্বরের শত্রুর ঘাড় ছিঁড়েছেন তার হাতে চুম্বন করা আবশ্যক। উল্লেখ্য, পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদককে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনি নিয়োগ দিয়েছেন।

ইরানের আরও একটি সংবাদ মাধ্যম ভাতান ইমরোজ শিরোনাম করেছে, সালমান রুশদির ঘাড়ে ছুরি। দৈনিক দ্য খোরাসান শিরোনাম করেছে, জাহান্নামের পথে মন্দ ।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে শুক্রবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটের মঞ্চে সালমান রুশদির ভাষণ শুরুর আগমুহূর্তে তার ওপর হামলা চালানো হয়। অনুষ্ঠানস্থলে তখন উপস্থিত ছিলেন প্রায় আড়াই হাজার দর্শক। হামলার সময় তাৎক্ষণিকভাবে অনেকে ঠিক কী ঘটছে, তা বুঝতে পারছিলেন না। সালমান রুশদি মেঝেতে গড়িয়ে পড়ার পর দর্শকদের কেউ কেউ তার কাছে ছুটে যান।

হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে হাদি মাতার নামের এক তরুণকে আটক করে নিউইয়র্ক পুলিশ। ২৪ বছরের এই যুবক যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের ফেয়ারভিউর বাসিন্দা। তিনি শিয়োকোটা ইনস্টিটিউটের ওই অনুষ্ঠানের পাস কিনে গিয়েছিলেন।

রুশদিকে ছুরিকাঘাতে অভিযুক্ত হাদি মাতারকে গতরাতে চৌতাকোয়া কাউন্টি কারাগারে স্থানান্তরিত করার পর তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে জামিন না দিয়ে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে এবং শুক্রবারের হামলার পর জেমসটাউনের নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশ ব্যারাক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাদি মাতারের তৎপরতা পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই তরুণ কট্টরপন্থী শিয়াদের প্রতি সংবেদনশীল। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) নীতিমালার প্রতিও সহানুভূতিশীল তিনি।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৭৫ বছর বয়সী লেখক রুশদি ১৯৮১ সালে তার লেখা দ্বিতীয় বই ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে তার চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর মুসলিমদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি এবং নিজেকে প্রায় ৯ বছর আড়াল করে রাখেন।

‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসটি প্রকাশের পর থেকে রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ১৯৮৯ সালে রুশদিকে হত্যার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ইরানের একটি ধর্মীয় সংস্থা খোমেনির ফতোয়া বাস্তবায়নকারীকে ২৭ লাখ ডলার পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেয়। ২০১২ সালে সেই পুরস্কারের অর্থ বাড়িয়ে করা হয় ৩৩ লাখ ডলার।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর