নারী ক্রেতার ফোন হাতে নিয়ে ছবি ‘হাতিয়ে নিতেন’ ডেলিভারিম্যান
গাজীপুর প্রতিনিধি: অনলাইনে পণ্য ডেলিভারির সময় কৌশলে নারীদের মোবাইলে গুগল এ্যাড্রেস যুক্ত হয়ে তাদের ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত হলেন, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চরগাঁওকোড়া গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে আল- আমিন (২২)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর রথখোলা স্বপন মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকতেন।
হাশেম (ছদ্মানাম) নামে একজন ব্যক্তির অভিযোগের পর প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে নগরীর রথখোলা থেকে ওই ডেলিভারি ম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ।
তিনি জানান, এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে, তার মেয়ের আপত্তিকর কিছু ছবি একজন দারাজের ডেলিভারি ম্যান বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে ছবি ভাইরাল করার হুমকি প্রদান করে। এতে তার মেয়ে লজ্জার ভয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ওই অভিযোগের পর গাজীপুর জয়দেবপুর রথখোলা এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে মিজানুর রহমান নামে দারাজের একজন ডেলিভারি ম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির ব্যবহৃত মোবাইলটি যাচাই-বাছাই এবং জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি জানান, দারাজ অনলাইন শপে নারী ও তরুণীদের টার্গেট করে পণ্য অর্ডার দেয়ার পরে ডেলিভারির সময় ডেলিভারিম্যান ক্রেতার গুগল লোকেশনে এ্যাড্রেস এ্যাড করে দেয়ার কথা বলে কৌশলে ক্রেতার মোবাইলটি হাতে নিতেন। এরপর ক্রেতার মোবাইলের গুগুল ফটোতে ঢুকে শেয়ারিং অপশনে গিয়ে শেয়ার উইথ পার্টনার হিসেবে ধৃত ডেলিভারিম্যান তার ব্যক্তিগত জিমেইল একাউন্ট এ্যাড করে মোবাইলটি ক্রেতাকে ফেরত দিয়ে দিতেন। কাজটি সম্পন্ন করতে সময় নিতেন ১/২ মিনিট। পরবর্তীতে ডেলিভারিম্যান তার সুবিধামত সময়ে মোবাইলের গুগল ফটোতে ঢুকে শেয়ারকৃত নারী ক্রেতার গুগলে থাকা সব ছবি তার মোবাইলে ডাউনলোড করে নিয়ে নিতেন। এভাবে ওই ডেলিভারিম্যান অভিযোগকারীর মেয়েসহ অনেক নারীর আপত্তিকর ও গোপন মুহূর্তের ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করাসহ টাকা চাইতেন এবং টাকা না দিলেই নেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিতেন।
উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, আসামি মিজানুরের মোবাইলে এমন বহু নারীর ব্যক্তিগত মুহূর্ত ও আপত্তিকর ছবিবসহ বিভিন্ন ব্যক্তির ১১টা ই-মেইল আইডি লগ-ইন অবস্থায় পাওয়া যায়। যাদের আইডি লগ-ইন অবস্থায় পাওয়া গেছে তাদের বিস্তারিত নাম ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। আসামির বিরুদ্ধে গাজীপুর সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।