মুদ্রাস্ফীতির কবলে পড়ে গরুর মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে আর্জেটিনা

আপডেট: June 23, 2024 |
inbound700414307259873299
print news

সংগৃহীত ছবি
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। গত চার মাস ধরে কিছুটা কমলেও, বর্তমানে দেশটির বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ৩০০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশটিতে গরুর মাংসের ব্যবহার কমেছে অন্তত ১৬ শতাংশ।

শনিবার (২২ জুন) এ নিয়ে এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিস্তীর্ণ গরুর খামার এবং আসাডো বারবিকিউর জন্য বিখ্যাত দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি। তাদের খাবারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ গরুর মাংস।

ফলে দেশটির রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে রাস্তার অলিতে গলিতে দেখা যায় স্টেক হাউজ। সেখানে মানুষ ভিড় করে গরুর মাংস খাওয়ার জন্য। কিন্তু চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আগের চেয়ে কম গরুর মাংস খাচ্ছেন আর্জেন্টাইনরা।

দেশটির রাজধানীতে এক কসাইয়ের দোকানে গরুর মাংস কেনার লাইনে দাঁড়িয়ে ৬৬ বছর বয়সী ক্লডিয়া সান মার্টিন বলেন, অর্থনৈতিক মন্দায় অনেক কিছু কাটছাঁট করলেও, এখনও এই মাংস বাদ দিতে পারিনি।

৪৮ বছর বয়সী কৃষি প্রকৌশলী লুইস মার্চি বলেছেন, ভৌক্তারা গরুর মাংসের বদলে অন্যান্য সস্তা খাবার যেমন: মুরগী বা শূকরের মাংস এবং পাস্তার দিকে ঝুঁকছে।

৫৩ বছর বয়সী চাষি গুইলারমো ট্রামন্টিনি বলেন, গরুর মাংস খুব বেশি দামিও নয়। কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ভয়ানকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বুয়েনস আয়ার্সে ৪০ বছর ধরে নিজের কসাইখানা চালাচ্ছেন জেরার্ডো টমসিন। ৬১ বছর বয়সী টমসিন বলেন, লোকেরা এখনও গরুর মাংস কিনতে আসছেন। কিন্তু তারা পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।

সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছর একজন আর্জেন্টাইন ৪৪ কেজি গরুর মাংস খেয়েছে, যা গতবছর ছিল ৫২ কেজি। ১৯৫০ সালে এর পরিমাণ ছিল ১০০ কেজির মতো।

দীর্ঘদিন ধরেই পতনের দিকে আর্জেন্টিনার অর্থনীতি। কিন্তু চলতি বছর উদারপন্থি প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের কঠোর ব্যবস্থার পর মূল্যস্ফীতি ৩০০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। দারিদ্র বেড়েছে। প্রধান শহরগুলোতে আরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

তবে দেশেটির স্থানীদের এ মাংস ব্যবহার কমে যাওয়ায় বেড়েছে রপ্তানি। এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনার গরুর মাংসের শীর্ষ ক্রেতা চীন।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অনেক কমে যাওয়ায়, রপ্তানি খাতটিও বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুক্ত বাজার অর্থনীতিবিদ মাইলি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর