ছাত্রী হলে ‘অচেনা’ সংগঠনের প্রোগ্রাম স্থগিতের আবেদন শিক্ষার্থীদের

আপডেট: October 4, 2024 |
inbound3787458091934436843
print news

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নারী শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল শেখ হাসিনা হলে ‘সিরাত সেমিনার ও কাওয়াল সন্ধ্যা অনুষ্ঠান’ আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘সোসাইটি অফ চেইন্জ মেকার ক্লাব’ নামক একটি সংগঠন।

তবে উক্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দাবি ‘অচেনা’ এমন একটি সংগঠনের এরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজনের ফলে বহিরাগতরা হলে প্রবেশ করতে পারেন।

এতে আতংকিত হয়ে হলের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর উক্ত অনুষ্ঠানটি স্থগিতের আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৮৫ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সহ এই আবেদন করা হয় বলে জানা গেছে।

উক্ত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৪ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাসরিন (১২তম), সাদিয়া (১৩ তম), তাওহীদা (১১তম), তানজিদা (১২), রুমা (১৩), সুহাইল (১৫), ফাতেমী (১৬), সাদিয়া (১৪), ফারজানা (১৫), উর্মি (১৬) তদারকিতে শেখ হাসিনা হলে ‘সিরাত সেমিনার ও কাওয়াল সন্ধ্যা’ নামক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে যেখানে আয়োজনে ‘সোসাইটি অফ চেইন্জ মেকার ক্লাব’ সংযুক্ত করা হয়েছে।

এই সংগঠন হলের নয় এবং আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীরা এ ধরণের কোনো সংগঠন সম্পর্কে অবগত নই। এই সংগঠনের কার্যক্রম কিংবা উদ্দেশ্য, নেতৃত্ব সম্পর্কেও অবগত নই।

তদোপরি, এই আয়োজনে বহিরাগতদের আমাদের হলে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি আমাদের নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরী করছে।

এছাড়াও, হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলমান এ ধরনের আয়োজন এই মূহুর্তে পড়াশোনার ব্যাঘাতও ঘটাবে। আমাদের হলের কোনো প্রাধ্যক্ষ নেই।

এরকম অবস্থায় হলে অজানা একটি সংগঠনের বহিরাগতদের অংশগ্রহণে এই আয়োজন আমাদেরকে নিরাপত্তা শঙ্কায় পতিত করছে।

হলের শিক্ষার্থী মিথিলা মিনহা বলেন, ‘সিরাত অনুষ্ঠান নিয়ে আমার কোনো দ্বিমত নেই বা ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান নিয়ে হলের কারোরই দ্বিমত হওয়ার কারণ নেই।

আমরা দ্বিমত হয়েছি সিকিউরিটি পারপাস নিয়ে। হলে এখন প্রশাসন নেই, এরমধ্যে অচেনা একটি সংগঠনের উদ্যোগে এমন একটি অনুষ্ঠান।

তাই আমরা নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে স্থগিতের আবেদন করেছি।’

শাম্মি আক্তার বলেন, ‘এখানে অচেনা একটি সংগঠনের উদ্যোগে এমন একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে এবং বাহির থেকেও নাকি লোক নিয়ে আসা হবে। এখন হলে প্রশাসন নেই।

নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করেই আসলে স্থগিতের আবেদনটি করা হয়েছে।’

আয়োজনকদের মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদিয়ার নাম রয়েছে। সাদিয়া বলেন, ‘সংগঠন বা ক্লাবটি এস্টাবলিশ কিছু না৷

আমরা কয়েকজন আলোচনা করে এটি ঠিক করেছি এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে।’

বহিরাগতদের আগমনের বিষয়ে বলেন, ‘এখানে বহিরাগত বলতে আমাদের পরিচিতিদের আত্মীয় স্বজন, বোনরা আসবেন। এছাড়া আর কেউ না।’

অনুমতির বিষয়ে বলেন, ‘আমরা হাউস টিউটর ও রেজিস্ট্রার স্যারের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েছি।’

স্থগিতের আবেদনের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা যখন আলোচনা করেছি তখন স্থগিতের বিষয়টি আসেনি। আবেদনের বিষয়টি জানি না।

এখানে অনিরাপত্তার কিছু নাই। এছাড়া, আমাদের সাউন্ড সিস্টেম থাকবে না এখানে পড়াশোনায় সমস্যা হওয়ার কথা না।’

আয়োজক নাসরিন আক্তার বলেন, আজকে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথমে আমি আমাদের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে বিষয়টি উত্থাপন করি। অনেকের সম্মতিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়৷

সংগঠনের বিষয়ে বলেন, এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই আসলে কয়েকজন মিলে এই ক্লাব বা সংগঠনটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি আসলে তেমন কিছু না।

অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে বলেন, আমাদের সাথের কয়েকজন বলেছেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তবে, কোন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে সেটি বলতে পারেননি তিনি।

স্থগিতের আবেদনের বিষয়ে বলেন, যেহেতু অনেক সংখক শিক্ষার্থী চাচ্ছেন না সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠানটি করা তো সম্ভব না।

হলের হাউস টিউটর মো. আল আমিন বলেন, ‘আমাকে আসলে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জানানো হয়েছে এই অনুষ্ঠানটি হবে। তখন অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এখন যেহেতু রেজিস্ট্রার বরাবর স্থগিতের আবেদন করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার অফিস থেকে যদি আমাকে স্থগিতের বিষয়ে জানান তাহলে আমি তা-ই করবো।

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সমাধান হয়ে আমাকে যা নির্দেশনা দেওয়া হবে আমি তা-ই করবো।’

রেজিস্ট্রার মোঃ মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘হ্যাঁ, শেখ হাসিনা হলে সিরাত অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

স্থগিতের আবেদনের বিষয়ে বলেন, ‘আমি বিষয়টা জানি না। যদি নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় সেক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর