অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি, রোববার থেকে কার্যকর

আপডেট: January 16, 2025 |
inbound7885986023232598871
print news

১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে মুক্তি মিলছে গাজার বাসিন্দাদের। গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরায়েল সম্মত হয়েছে।

বুধবার কাতারের রাজধানী দোহায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছায়। আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে কার্যকর হবে।

বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতারের স্থানীয় সময় রাত ১০টার কিছু আগে সাংবাদিকদের সামনে তিনি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার এ ঘোষণা দেন। ওই ব্রিফিংয়েই চুক্তি কার্যকর হওয়ার এ সময়সীমা জানান কাতারের প্রধানমন্ত্রী।

যুদ্ধ শেষ হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল–থানি বলেন, আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে। সব পক্ষ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

এর আগে কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে বন্দিদের জন্য আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। তারা শিগগিরই মুক্তি পাবেন। ধন্যবাদ।’

একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর হোয়াইট হাউজে দেয়া ভাষণে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, শিগগিরই জিম্মিরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১০ জন নিহত হন। ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা হয় ২৪১ জনকে। তাদের মধ্যে ৯৪ জন এখনো গাজায় বন্দী রয়েছেন। হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৬ হাজার সাতশ’র বেশি জন।

সংঘাতের এই ১৫ মাসের মধ্যে শুরুর দিকে একবার মাত্র সাত দিনের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। এরপর থেকে কয়েক দফা যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা হলেও আলোর মুখ দেখেনি। এরই মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তির চাপ বাড়তে থাকে। এ লক্ষ্যে মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে জোর তৎপরতা শুরু করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। হামাস ও ইসরায়েলের সঙ্গে শুরু করে আলোচনা।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল–থানি তার কার্যালয়ে আলাদাভাবে হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে একমত হন দুই পক্ষ।

এদিকে যুদ্ধবিরতির খবর সামনে আসার পর গাজার বাসিন্দাদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। মধ্য গাজার দেইর আল–বালাহ ও অন্যান্য এলাকায় জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। আনন্দে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে অনেককে মুঠোফোনে ছবি তুলতে দেখা যায়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর