কুষ্টিয়ায় পৌর বিএনপির কাউন্সিলে ভোট কারচুপির অভিযোগ পরাজিত প্রার্থীর


আসাদুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে প্রত্যাখ্যান করেছেন সভাপতি পদে পরাজিত প্রার্থী আখতারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদার।
তিনি বলেন, এই অনিয়ম ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি।
এদিকে এ বিষয়ে রবিবার এন এস রোডে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সেখানে খবর পৌঁছায়, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের টয়লেটে সভাপতি পদে পরাজিত প্রার্থী আখতারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদারের চেয়ার প্রতীকের সিলমারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে দুপুর থেকেই দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজল মাজমাদার বলেন, নির্বাচন ঘিরে জনমনে নানা সংশয় থাকলেও আমরা দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের অনুশীলনের জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম।
একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম।
কিন্তু আমাদের আশঙ্কাকে সত্যি করে নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন সম্পন্ন করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এবং কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে এবং নানামুখী বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারকে নির্বাচন পাতানোর জন্য দায়ী করে প্রভাবশালী এই নেতা বলেন, তাদের থেকে আমরা দূরে ছিলাম।
কিন্তু তারা সুষ্ঠু ভোটের কথা বলে ডেকে এনে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল একটি সুষ্ঠু ভোটের সেই ওয়াদা তারা রক্ষা করেননি।
শুক্রবার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপি’র দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল শেষে ভোটে সভাপতি পদে একে বিশ্বাস বাবু ও সাধারণ সম্পাদক পদে কামাল উদ্দিন বিজয়ী হন।
পরে কাজল মাজমাদার ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুনর্গণনার আহ্বান জানান। পরদিন শনিবার পুনর্গণনা শেষে চার ভোট বেড়ে কাজলের ভোটের সংখ্যা হয় ৫৯৯।
অন্যদিকে জয়ী প্রার্থী বাবুর ভোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াই ৬১১। এ তথ্য জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কাজল বলেন, চার ভোট বেড়ে যাওয়ায় প্রমাণ হয়, ভোটে কারচুপি হয়েছে।
তাছাড়া এইমাত্র আমরা খবর পেলাম, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের টয়লেটে প্রায় শতাধিক সিলযুক্ত ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।
সার্বিক অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ভোটের সারাদিন কারো কোন অভিযোগ ছিল না।
ভোট গণনার সময় কোন অভিযোগ ছিল না। কিন্তু ফলাফলের পরই তাদের যত অভিযোগ। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে শতভাগ স্বচ্ছ একটি নির্বাচন করেছি। এখানে কারচুপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহবায়ক এবং প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্র থেকে প্রথমে দুই সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।
পরবর্তীতে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।