পিকে হালদারকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে হালদার) ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি হয়েছে। বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার এ আদেশ দেন।

জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর যুগান্তরকে বলেন, জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় পিকে হালদারকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের লক্ষ্যে আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এর আগে বুধবারই দুদকের পদক্ষেপের হালনাগাদ প্রতিবেদন দাখিলের সময় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আড়াই মাসেও পিকে হালদারকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলের জন্য পরোয়ানা জারি না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন।

পিকে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতেই পিকে হালদার বিদেশ পালান। এরপর ৩০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

এদিকে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তার আবেদন করে কমিশন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে করা সব মামলার নথি চায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।

আর্থিক খাত থেকে আত্মীয়-স্বজন চক্রের মাধ্যমে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেয়ার কারিগর পিকে হালদারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। দুদক ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে। এছাড়া দুদকের ক্যাসিনো দুর্নীতির মামলায় চার্জশিট তালিকায় লিজিং কোম্পানি ও আর্থিক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারে জড়িত পিকে হালদারের নামও রয়েছে। ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতায় তার বিরুদ্ধে ৮ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

এদিকে নিরাপত্তা চেয়ে ১৯ অক্টোবর হাইকোর্টে আবেদন করে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) জানায়, আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিতে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আদালতের আশ্রয়ে পিকে হালদার দেশে ফিরতে চাইছেন। আবেদন গ্রহণ করে ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট এক আদেশে বলেন, পিকে হালদার বিমান থেকে দেশের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত আদালতে সোপর্দ করতে হবে। পিকে হালদার যদি দেশে আসেন, তাহলে এ কোম্পানি ম্যাটারটা নিষ্পত্তি করা যাবে।

সেটা নিষ্পত্তি করার জন্য এ কোর্ট দেখতে চায় যে, তিনি বিমানে দেশে পা ফেলা মাত্র তাকে যেন অ্যারেস্ট করা হয় এবং জেলে নেয়া হয়। তাকে যেন বাইরে যেতে না দেয়া হয়। এ কাজটা যদি করা হয়, তাহলে তার আবেদন অনুযায়ী তিনি যে মনে করছেন, তাকে কিডন্যাপ করা হবে, তা আর হবে না। তবে ২৪ অক্টোবর পিকে হালদার দেশে ফিরছেন না বলে দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে আইএলএফএসএলের আইনজীবী ই- মেইল করে জানান।

 

বৈশাখী নিউজ/ এপি