সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, শ্লোগানে উত্তাল শাহবাগ

আপডেট: August 10, 2024 |
inbound4977263445532527669
print news

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

শনিবার বিকেল ৩টার পর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে শাহবাগ হয়ে ফার্মগেট, মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ হয়ে এলিফ্যান্ট রোড এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

গতকাল শুক্রবারও প্রায় ৪ ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করেন কয়েকশ’ মানুষ। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও চার দফা দাবি জানান বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড-ব্যানার হাতে।

এ দেশে জন্ম আমার, দেশটা কোনো ধর্মের না, আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই, উই ওয়ান্ট জাস্টিজ, বাংলাদেশ কারো বাপের নাসহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক সংগঠনের একজন বলেন, হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট চালানো হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে হত্যাকাণ্ড হয়েছে। আমরা তো এ দেশেই জন্মেছি, আমরা কোথায় যাবো? ক্ষমতায় যেই আসুক আমাদের নিরাপত্তা চাই। আমরা আমাদের বাসস্থান ও ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা চাই।

সমাবেশে অংশ নেয়া বাংলাদেশ সচিবালয় সনাতন কমিউনিটির আহ্বায়ক মিটু কুমার রায় বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তা দেয়ার মতো কেউ নেই। প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেয়ার জন্য অনেকে বর্ডারে গিয়ে বসে আছে। তাদের সম্মানের সঙ্গে বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। আজ থেকে একটা হিন্দু বাড়ি, মন্দির যেন পাহারা দিতে না হয়। মসজিদের মতো মন্দিরও যেন নিরাপদ থাকে।

রাষ্ট্র ও গণমাধ্যম সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা মল্লিক। তিনি বলেন, আমরাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। সেখানে বিজয়ী হলেও আমাদের মুক্তি নেই। তাই আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় আবারো রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা নিরাপত্তা চাই। সনাতনী সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

বিক্ষোভে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করার দাবি নিয়ে ৪ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে; সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করার পর থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরেও হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর